১৯৭১ সাল ২৬শে মার্চ, স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা হয়। শুরু হয় স্বাধীনতার আন্দোলন। লাখো মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বে গাঁথা সেই স্বাধীন বাংলার ইতিহাস। যে ইতিহাসকে বুকে লালন করে রেখেছে বাঙালিরা। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করা হয়। স্মরণ করা হয় তাদের ত্যাগের কথা, তাদের বীরত্বের কথা। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস এভাবেই প্রজ্জ্বলিত হয়ে রয়েছে বাঙালির হৃদয়ে।
মহান মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে উজ্জ্বীবিত রাখতে দেশজুড়ে স্থাপিত হয়েছে নানা স্থাপনা। এরই একটি হচ্ছে শিখা চিরন্তন। যা ‘স্বাধীনতার অগ্নিশিখা’ নামেও পরিচিত। দেশপ্রেমে প্রোজ্জ্বল এই শিখা চিরন্তন মহান মুক্তিযুদ্ধের অনন্য স্থাপনা। স্বাধীনতা সংগ্রামের জলন্ত এ স্মারক বাঙালির শৌর্য-বীর্য আর অহংকারের প্রতীক।
বাঙালির বুকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধারণ করে রাখতেই তৈরি করা হয়েছে শিখা চিরন্তন। যা দেশপ্রেমের বার্তা পৌছে দেয় নতুন প্রজন্মের কাছে। দিন থেকে রাত জ্বলে যাচ্ছে এই অগ্নিশিখা।
রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবস্থিত এই শিখা চিরন্তন। ১৯৯৬ সালে এটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শিখা চিরন্তন প্রোজ্জ্বলন করেন। ওই সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিলিস্তিনের ইয়াসির আরাফাত, তুরস্কের সুলেমান ডেমিরেলভ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই স্থানে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণে বাঙালিদের সোচ্চার হতে বলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান একে নিয়াজি ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে এ উদ্যানেই মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেন। এসব ঘটনাকে স্মরণ করে রাখতেই শিখা চিরন্তনের এই স্থাপনার উদ্বোধন হয়।
শুধু শিখা চিরন্তনই নয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্লাজা চত্বরের পূর্ব পাশের দেয়ালে রয়েছে ম্যুরাল। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের চিত্র টেরাকোটা ম্যুরালে তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের গল্প সেখান থেকেই জানবে আগামী প্রজন্ম।
বিশিষ্টজনদের মতে, স্বাধীনতার এসব নির্দশণ থেকেই আগামীর প্রজন্ম জানবে স্বাধীনতার ইতিহাস। তাদের মধ্যে জেগে উঠবে দেশপ্রেম। ভালোবাসবে দেশকে। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।