পরিবারে শিশুদের খুনসুটি স্বাভাবিক একটা বিষয়। বয়সে কাছাকাছি ভাইবোনের মধ্যে এধরনের সম্পর্ক বেশি দেখা যায়। তবে অনেক সময় শিশুদের এ আচরণ সীমা অতিক্রম করে বসে। তারা একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের অবস্থা শিশুর জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। এই শিশুরা স্কুলে গিয়েও বন্ধুদের সঙ্গে হাতাহাতি বা মারামারিও করে ফেলে। আবার অনেক সময় আপনার কোনো কাজ সন্তানের পছন্দ না হলে রাগের মাথায় সে আপনাকে আঘাতও করে বসে।
পরিবারের বাবা-মায়ের বড়ো একটা বড়ো ভূমিকা থাকে শিশুর সুন্দর আচরণ গঠনে। তবে ব্যস্ততা আর কর্মজীবনের চাপে অনেক সময় শিশুর স্বাস্থ্যের সব খুটিনাটি বিষয় আমাদের মাথায় থাকে না। যার কারণেই ঘটে এধরনের বিপত্তি। বাবা-মায়ের থেকে যথাযথ সময় না পেলে অনেক ক্ষেত্রে শিশু তার রাগের বহিঃপ্রকাশ দেখায় অন্য কারও ওপর। সেক্ষেত্রে অভিভাবক হিসেবে প্রথম পদক্ষেপ আপনাকেই নিতে হবে।
শিশুরা রেগে গেলে বা ক্ষেপে গেলে তাকে বকাঝকা করবেন না। এই প্রকার ব্যবহার করলে তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ভুলটা বোঝানোর চেষ্টা করুন। সন্তান যদি কিছুতেই শুনতে না চায়, রেগে গিয়ে অন্যকে কিংবা নিজেকে আঘাত করে তা হলে জড়িয়ে ধরে তাকে শান্ত করুন। বকুনির তুলনায় এই উপায় নিঃসন্দেহে বেশি কার্যকর হবে।
অনেক সময় অভিভাবকরা নিজেরাই শিশুর সামনে তর্ক-বিতর্ক কিংবা ঝগড়া-বিবাদ শুরু করেন। ভুলেও এই কাজ করবেন না। শিশুরা যা দেখবে তাই শিখবে। এতে শিশুদের মনে কুপ্রভাব পড়তে পারে। তারাও অন্যের সঙ্গে একই আচরণ করবে।
খেলার মাঠে অথবা অন্য কোথাও আপনার সন্তান অন্য শিশুর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ, হাতাহাতি করলে তখনই সেই স্থান থেকে তাকে সরিয়ে নিয়ে আসুন। বাড়িতে ঠান্ডা মাথায় সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। তার মনের কথা জানার চেষ্টা করুন। আপনি যে তার পাশে সব সময় আছেন, সেই কথাটা শিশুকে বারবার মনে করিয়ে দিন। অভিবাবকের পাশাপাশি শিশুর বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করুন।
বন্ধু তাদের কোনো খেলনায় হাত দিলে অনেক শিশুই রেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। শিশুদের মনে এধরনের ঈর্ষা তৈরি হতে দেবেন না। কোন ক্ষেত্রে কেমন ব্যবহার করতে হবে সেই শিক্ষা আপনাকেই দিতে হবে। ছোট থেকেই তাদের শিষ্টাচার শেখাতে শুরু করুন।
শিশু কোন কোন ক্ষেত্রে এমন আচরণ বেশি করছে তা লক্ষ্য করুন। আপনার শিশু রেগে যেতে পারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই শিশুকে সবধান করুন। তার মনোযোগ অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন।