চুলা পড়া নিয়ে আতঙ্কে ভোগেন অনেকেই। ছেলে-মেয়ে উভয়েরই এই সমস্যা হয়। প্রতিদিন সামান্য চুল পড়া সাধারণ ঘটনা। কিন্তু অতিরিক্ত চুল পড়া মোটেও সাধারণ নয়। এর পেছনে কিছু কারণ থাকে। মেয়েদের চুল পড়লে তা আবার জন্মানোর উপায় থাকে। কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে বিষয়টি হয় বিপরীত। একবার পড়া শুরু হলে সেখানে নতুন করে চুল জন্মানোর সুযোগ কমই থাকে। তাই তো ছেলেদের মাথা ধীরে ধীরে টাক হয়ে যায়।
হালের ফ্যাশনে ছেলেরা এখন ছোট-বড় চুল রাখে। তা ঠিকমতো পরিষ্কারও রাখতে হয়। চুল পরিষ্কার রাখতে শ্যাম্পু লাগিয়ে ঘষে ফেনা তুলেই ধুয়ে ফেলছেন। এটাই করছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু এতটা সহজ নয় বিষয়টি। চুল ধোয়ার সময়ই কিছু ভুল করেন ছেলেরা। সেই কারণেই খুব কম বয়সেই অনেক ছেলের চুল পড়ে। একপর্যায়ে টাকও হয়ে যায়। এছাড়া ছেলেরা চুলের নানা সরঞ্জাম ব্যবহার করে। স্টাইলের কারণে সাময়িক সুন্দর দেখালেও চুলের জন্য় এগুলো মারাত্মক ক্ষতিকর।
ছেলেদের কিছু ভুলের কারণেই নিয়মিত চুল পড়ে। অজান্তেই হয়তো এমনটা হচ্ছে। তাই যেসব ভুলের কারণে নিয়মিত চুল পড়ছে তা জেনে রাখা জরুরি।
ছেলেরা খুব বেশি বাইরে চলাফেরা করেন। তাই প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে হয়। দিনে দুই-তিনবার গোসল করলেই শ্যাম্পু ব্যবহার করেন। ছোট চুল, তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় বলে প্রতিবারই গোসলে শ্যাম্পু করছেন। এটা ছেলেদের চুলের ত্বকের জন্য় মারাত্মক ক্ষতিকর। ধুলো ময়লা পরিষ্কার করতে শ্যাম্পু করা জরুরি। কিন্তু তা অতিরিক্ত নয়। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। চুল পড়ার সমস্যাও বেড়ে যায়।
অধিকাংশ ছেলেই শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না। তাদের ধারণা, ছোট চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। তাই মেয়েরাই কন্ডিশনার ব্যবহার করবে। এটা একদমই ঠিক নয়। কন্ডিশনার চুলকে প্রাণবন্ত করে। ছেলে-মেয়ে উভয়কেই শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। কারণ, শ্যাম্পু করার পর চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে যায়, যা ধরে রাখতে কন্ডিশনার কাজ করে।
শীতে গরম পানি দিয়ে অনেকেই গোসল করেন। এক্ষেত্রে পানিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এনে গোসল করা জরুরি। বিশেষ করে চুলের জন্য়। কারণ চুলে গরম পানির ব্যবহার করা মোটেও উচিত হয়। হালকা গরম পানি হয়তো ব্যবহার করতে পারেন। তবে এটিও এড়িয়ে চলা ভালো। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে চুলে পানি ঢালুন। নয়তো চুল পড়া শুরু হয়ে যাবে। কারণ, এতে চুলের ত্বক নরম হয়ে যায়।
অধিকাংশ ছেলেই গোসলের পরই ভেজা চুল আঁচড়ে নেন। শুকানোর সময়টাও দেন না। এটাও চুলের জন্য় ক্ষতিকর। বলা যায়, এটা মারাত্মক ভুল। চুল যতই ছোট ভেজা চুল আঁচড়ানো উচিত নয়। ভিজে চুলের গোড়া নরম থাকে। ভেজা চুল আঁচড়ানো হলে তা বেশি পড়ে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চুল হালকা শুকিয়ে নিন। এরপর আঁচড়ালে খুব একটি ক্ষতি হবে না।
ছেলেরা চুল স্ট্রেট করার জন্য় বা কালার করতে কেমিকেলযুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার করে, যা চুলের জন্য় মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ক্ষেত্রে যেকোনো প্রসাধনী নয়, বরং ভালো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে চুলের ক্ষেত্রে এসব ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
ছেলেরা চুল স্ট্রেট করার জন্য় স্ট্রেটনার ব্যবহার করে। স্ট্রেটনারের অতিরিক্ত ব্যবহারও চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া হাই হিটে চুল স্ট্রেট করলে চুল তার চাকচিক্য হারায়। এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিকভাবে চুলকে স্ট্রেট রাখার উপায়গুলো পরখ করে দেখতে পারেন।
মেয়েরা চুলের ক্ষেত্রে বেশি যত্নশীল হয়। অন্যদিকে ছেলেরা একদমই উদাসীন। চুল পড়া শুরু হলে অনেকে সতর্ক হোন। অনেকে আবার টাক হওয়ার পর চুলের জন্য আফসোস করেন। কিন্তু শুরুতেই যদি যত্নশীল থাকা যায় তাহলে চুল পড়া কমিয়ে নেওয়া সম্ভব। এর জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এখন ছেলের বিভিন্ন পার্লার রয়েছে। সেখানেও হেয়ার প্যাক লাগিয়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।