বাঙালি বছরে দুইবার নতুন বছরের আনন্দ উদ্যাপন করে থাকে। এই দুটি নতুন বছরের পার্থক্য শুধু ঋতুতে। একটির শুরু গ্রীষ্মে, অন্যটির শুরু শীতে। গ্রীষ্ম বা শীত যা–ই হোক না কেন, নতুন বছরকে বরণ করার আনন্দ তো থাকবেই। ইংরেজি নববর্ষকে বরণ করতে আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছি। কর্মব্যস্ত সময়ের মাঝেও বাঙালি সেজে উঠবে নতুন বছরকে বরণ করার উদ্দেশে। ঘরে-বাইরে থাকবে বর্ষবরণের নানান আয়োজন। মূলত ৩১ ডিসেম্বরই শুরু হবে নতুন বছরকে বরণ করা নিয়ে এ আয়োজন। ঘর সাজানো থেকে শুরু করে খানাপিনা, সবকিছুতেই থাকবে উৎসবের ছোঁয়া। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক বর্ষবরণে কি কি থাকতে পারে বাঙালির আয়োজনে-
শুভেচ্ছাবার্তা
নিউ ইয়ার পালনের হিড়িক বা প্রবণতা মূলত তারুণ্য–নির্ভর। নতুন বছরে নিয়ম করে বাইরে খাওয়া, মেসেজিং, উপহার দেওয়া থেকে এর যাবতীয় ইভেন্টে তরুণদেরই দেখা যায় সামনের সারিতে। এ দিনে বন্ধু ও প্রিয়জনকে পাঠানো হয় শুভেচ্ছাবার্তা।
কেক কেটে বর্ষবরণ
নতুন বছরকে বরণ করে নিতে এখন ঘরে ঘরে কেট কাটার আয়োজন দেখা যায়। বাঙালিরা হাসি-আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতেই এ আয়োজন করে থাকে। ৩১ ডিসেম্বর রাতে পরিবার, বন্ধু ও আত্মিয়ের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন এ আনন্দ আড্ডায়।
পোশাক
কোনো উৎসবকে যাপনের প্রধান মাধ্যমই নিজেকে রাঙিয়ে তোলা। নতুন বছরকে অভিবাদন জানান রঙিন পোশাক পরে। এদনিটাকে পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক পরতে পারেন। আবার যদি বন্ধুদের সঙ্গে পার্টির পরিকল্পনা থাকে তাহলে তো একই থিমের পোশাক পরাই হবে শ্রেষ্ঠ। রঙিন পোশাকে সেজে উঠুন উৎসবের আনন্দে। তবে দিনটাকে আরও অনন্দঘন করে তুলতে সঙ্গে রাখতে পারেন প্রপস। বাজারে এখন সহজেই পেয়ে যাবেন বিভিন্ন থিমের প্রপস। তাছাড়া বাসায় রঙিন কাগজ কেটে সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন পছন্দসই এসব প্রপস।
অতিথি আপ্যায়নে বর্ষবরণ
বাঙালির ঘরে বিশেষ দিনে অতিথি থাকবে না, এটা হতেই পারে না। নতুন বছরকে বরণ করতে এই দিনটিতে ঘরে থাকবে প্রিয়জনরা। অতিথিদের নিমন্ত্রণ জানিয়ে ঘরেই পার্টি করতে পারেন। কিংবা কোনো পার্টির দাওয়াতেও নিজেকে সাজিয়ে পরিবারকে নিয়ে হাজির হয়ে যাবেন। বাড়ির পার্টিতে অতিথি এলে তাদের আপ্যায়নে খাবারের ব্যবস্থা রাখুন। তাদের বিনোদনের জন্য় গানের ব্যবস্থা করতে পারেন। পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গেই মেতে উঠুন নতুন বছরের আনন্দ উদযাপনে।
বারবিকিউ পার্টি
আমাদের বাঙালি মানসে এই ইংরেজি নববর্ষ মানেই বারবিকিউ পার্টি আর সঙ্গে থাকবে মেটাল মিউজিক। এরই সঙ্গে মিশে আছে অদম্য তারুণ্য। তাই এবছরও বাড়ির ছাদে করতে পারেন বারবিকিউ পার্টি। আনতে পারেন রান্নার বিভিন্নতাও। আর সঙ্গে থাকবে সুস্বাদু খাদ্য-পানীয়।
তারাবাজি, আতোশবাজি ফুটানো ও ফানুস উড়ানো
নতুন বছর আর বাজি ফুটবে না, তা কি হতে পারে? এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। নিজের আনন্দ মিশিয়ে দিন সকলের মাঝে। আকাশে ফুটুক হরেক বাজি। আর আমাদের রঙিন স্বপ্ন নিয়ে উড়ে যাক ফানুস। তবে একটা বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, আপনার আনন্দ যেনো অন্য কারোর বিরক্তির কারণ না হয়। তাই সচেতন থেকে সীমাবদ্ধতার মধ্যেই আনন্দকে যাপন করুন।
লং ড্রাইভে যাওয়া
আলো–ঝলমলে সুসজ্জিত শহরে মধ্যরাতে বন্ধুদের সঙ্গে খোলা জিপে কিংবা জ্যাকেট গায়ে বাইকে চড়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানোর মজায় আলাদা। তবে এ সারিতে তরুণদেরই দেখা মেলে বেশি। তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা রুফটপ রেস্টুরেন্টের খোলা আকাশ উপভোগ করতে পারেন বছর প্রথম দিনে।