হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় এলে কী করবেন

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ১২:২৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকালে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় হয়। এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। এই ঝড়ের গতিপথ অনেক সময়েই অপ্রত্যাশিত হয়। কালবৈশাখী ঝড়ে প্রবল বাতাস, বজ্রপাত, বৃষ্টিপাত এবং কখনো কখনো শিলাবৃষ্টিও হয়ে থাকে। গ্রামে ও শহরে উভয় এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে ভয়াবহভাবে। তবে কালবৈশাখী ঝড় একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও সচেতনতা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে এর ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।তাই হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় এলে কী করবেন, তা জানা জরুরি।

ঝড়ের পূর্বাভাস জানুন
প্রথমত, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আবহাওয়ার খবর নিয়মিত শোনা বা মোবাইল অ্যাপে দেখে নেওয়া উচিত। যদি আবহাওয়া অফিস থেকে কোনো ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়, তাহলে সতর্ক থাকা উচিত এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

ঘরের ভেতরে থাকুন
হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হলো আপনার ঘরের ভেতর। যদি আপনি বাইরে থাকেন এবং আকাশ কালো হয়ে আসছে, হঠাৎ বাতাসের গতি বেড়ে যাচ্ছে, তাহলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে গাছের নিচে, খোলা মাঠে কিংবা উঁচু কোনো স্থানে অবস্থান ঝুঁকিপূর্ণ।

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন
ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু থাকা বিপজ্জনক হতে পারে। বজ্রপাতের কারণে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে আগুন ধরে যেতে পারে কিংবা শর্ট সার্কিট হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঘরে থাকলে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন, এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন
ঝড়ের সময় প্রচণ্ড বাতাসে জানালা ভেঙে যেতে পারে, অথবা ঘরের ভেতরে ধুলো, পানি ও অন্যান্য বস্তু ঢুকে ক্ষতি করতে পারে। তাই জানালা-দরজা বন্ধ করে দিন।

গৃহপালিত প্রাণী ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিরাপদ স্থানে সরান
যদি বাড়িতে গরু, ছাগল বা অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণী থাকে, তবে তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। খোলা জায়গায় বা গাছপালার নিচে বেঁধে রাখলে তারা ঝড়ে আহত বা নিহত হতে পারে। একইভাবে, ছাদে বা বারান্দায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেমন—প্লাস্টিকের চেয়ার, টিন, ফুলের টব ইত্যাদি সরিয়ে ফেলুন, যাতে তা বাতাসে উড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা না ঘটায়।

খোলা জায়গা এড়িয়ে চলুন
কালবৈশাখী ঝড়ের সময় যারা রাস্তায় থাকেন, তাদের সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হয়। রাস্তায় থাকা অবস্থায় যদি ঝড় শুরু হয়, তবে যত দ্রুত সম্ভব কাছাকাছি কোনো পাকা ভবনের নিচে আশ্রয় নিন। গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি বা বিলবোর্ডের নিচে দাঁড়ানো বিপজ্জনক, কারণ এইগুলো ঝড়ে পড়ে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

ঝড়ের সময় অনেকেই মোবাইলে কথা বলতে থাকেন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। কিন্তু বজ্রপাতের সময় মোবাইল বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে। তাই ঝড় থামা পর্যন্ত এগুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

গ্রামে বিশেষ সতর্কতা
গ্রামীণ এলাকায় ঘরবাড়ি সাধারণত টিন বা খড়ের তৈরি হয়ে থাকে। এই ধরনের ঘর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ঝড় শুরু হলে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঘরের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন। ঘরটি যদি  খুবই দুর্বল হয়, তবে নিকটস্থ স্কুল বা পাকা বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া ভালো।

ঝড় থেমে গেলে যা করবেন
ঝড় থেমে গেলে প্রথমেই নিজের ও পরিবারের সকলের খোঁজ নিন। আশপাশের মানুষের সহায়তা প্রয়োজন হলে এগিয়ে যান। যদি বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকে, তবে ইলেকট্রিক লাইন থেকে দূরে থাকুন। স্থানীয় প্রশাসন বা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে সাহায্য চাইতে পারেন।