বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের নিরিখেই বাজেটকে দেখতে চাই : ড. মোস্তাফিজুর রহমান

সানজিদা শম্পা প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৪, ০৫:১১ পিএম

চলতি বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। যার প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার আসে গত ফেব্রুয়ারিতে।

বাংলাদেশকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত কিস্তিতে এই অর্থ দেওয়া হবে। তবে এই ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে আইএমএফ বেশ কিছু সংস্কারের শর্তও বেঁধে দিয়েছে। রাজস্ব সংস্কার, মুদ্রা ও বিনিময় হারের সংস্কার, আর্থিক খাতের সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সংস্কার এবং সামষ্টিক কাঠামোগত সংস্কার। এসব শর্ত ২০২৬ সাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। তবে আগামী এক বছরের মধ্যে কয়েকটি শর্ত বাস্তবায়ন করতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। তৃতীয় কিস্তির ঋণ পেতে চলেছে বাংলাদেশ খুব শিগগিরই।

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যে বাজেটটি আসতে চলেছে, সেখানে আইএমএফের এই ঋণ শর্ত কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে কথা বলেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সানজিদা শম্পা।

সংবাদ প্রকাশ: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আইএমএফের ঋণশর্ত কতটুকু পরিলক্ষিত হবে?

ড. মোস্তাফিজুর রহমান: এবারের বাজেট তো ব্যতিক্রমী সময়ে হচ্ছে, বাজেটটি ব্যতিক্রমী হবে কিনা সেটি দেখার বিষয়। আমি মনে করি বাংলাদেশের বাজেট বাংলাদেশের অগ্রাধিকার এবং যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটির পরিপ্রেক্ষিতে হতে হবে। আইএমএফ বেশকিছু শর্ত দিয়েছে এবং সে শর্তগুলোর মধ্যে অনেক শর্ত রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরাও অনেকবার আলোচনা করেছি। সুতরাং সেদিক থেকে আইএমএফের শর্তপালনের নিরীক্ষা নয়, বাংলাদেশের অগ্রাধিকার প্রাপ্ত যে কার্যাবলী আছে, সেটার নিরিখেই আমি বাজেটকে দেখতে চাই। আইএমএফও বলেছে, আমাদের যে সম্পদ আহরণ তা জিডিপির ৫ শতাংশের মতো বাড়াতে। সেটার একটা উদ্যোগ বাজেটে থাকতে হবে। এ বিষয়টি আইএমএফ না বললেও তা আমাদের রাখতে হবে। কারণ গত বেশ কয়েকবছর ধরে আমাদের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ জিডিপির অনুপাত হিসেবে ধরলে তা ৮ শতাংশে নেমে গেছে, যা ১১ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। সেদিক থেকে আমাদের একটা তাগিদ থাকতে হবে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে যে আয় করি (ট্যাক্স, নন ট্যাক্স, এনবিআর বহির্ভূত ট্যাক্স) সেসব ক্ষেত্রে একটি উদ্যোগ থাকবে বলে আশা করি। এটি নিশ্চিত করতে গেলে আমাদের মূলত চাপ দিতে হবে অপ্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ করের দিকে। প্রত্যক্ষ কর আমাদের এক তৃতীয়াংশ এবং অপ্রত্যক্ষ কর ২ তৃতীয়াংশ। অপ্রত্যক্ষ করের চাপ পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর। আমরা যদি রেভিনিউ বাড়াই অপ্রত্যক্ষ করের ওপর ভিত্তি করে, এটি একদিকে সম্পদ বণ্টনের ন্যায্যতার বিরুদ্ধে হবে; অন্যদিকে এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। আইএমএফ যাই বলুক না কেন, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, যদি ভর্তুকি প্রত্যাহার করি, যদি প্রণোদনা পুনর্বিবেচনা করি যা আইএমএফ বলছে; এটির মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আমাদের সাধারণ মানুষের উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে যারা জর্জরিত, তাদের কীভাবে আমরা কিছুটা সুরাহা দিতে পারি, সেক্ষেত্রে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপরে যাতে নতুন কর আরোপ না হয় বরং সেখানে যদি কিছু রেয়াত দেওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের করতে হবে সামাজিক সুরক্ষা, যেটি আইএমএফও বলেছে। সামাজিক সুরক্ষা খাতের ভিত্তি প্রাপ্তি, স্থায়িত্ব বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।

বাড়তি হিসেবে আমরা চাচ্ছি, আরবান এলাকাতে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে কীভাবে সামাজিক সুরক্ষা করতে পারি। আরবান ওয়ার্কারদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা করার কথা চিন্তা করতে পারি কিনা, তা বাজেটে থাকতে পারে। বেশিরভাগ জরিপে আমরা দেখতে পাই, সাধারণ মানুষ, নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের খাদ্য প্রাপ্তিতে অবনমন হয়েছে, খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের বাচ্চাদের জন্য মিড ডে মিলের বরাদ্দ যদি বাজেটে রাখা হয়, সেটির আবেদন আমরা করি। সুতরাং সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সুসংহত বিন্যাস আমরা কামনা করি।

অন্যদিক থেকে, রপ্তানি খাতে রপ্তানিকারকরা এখন প্রতি ডলারের বিনিময়ে ১১৭ ডলার পাচ্ছেন, সেখানে পুনর্বিবেচনা করা সম্ভব। রেডিমেড গার্মেন্টসে বৈশ্বিক বাজারে কটন বহির্ভূত মেন মেইড ফাইবারের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে প্রণোদনার পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন। অন্যান্য খাতে বন্ড সুবিধা বাড়িয়ে কীভাবে রপ্তানি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারি সেদিকে নজর দিতে হবে।

এবার সংকোচনমূলক বাজেট হতে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতির নিরিখে বাজেটের সাইজ কম হতে পারে এবার। আমার মনে হয় উচ্চ প্রবৃদ্ধিকে মূল না ধরে কীভাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করতে পারি, সেদিকে নজর দিতে হবে। নতুন প্রজেক্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা, নির্বাচিত করা, চলমানগুলোকে দ্রুত শেষ করতে হবে।

সামগ্রিকভাবে, বাজেট দিয়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তা সামাল দেওয়া যাবে না। তবে বাজেট একটি ভালো ইনস্ট্রুমেন্ট। কিন্তু এর সাথে সাথে সুশাসন, প্রজেক্ট বাস্তবায়ন, পাবলিক সার্ভিস যারা দিয়ে থাকেন তাদের শক্তিশালী যেন করতে পারি। যাতে করে এ ধরনের সংকোচনমূলক বাজেটে বিরূপ প্রভাব না পড়তে পারে।

সংবাদ প্রকাশ: আইএমএফের শর্তে ভর্তুকি কমানোর কথা বলা হয়েছে। বাজেটে ভর্তুকি কমানোর বিষয়টিকে কীভাবে দেখতে চান?

ড. মোস্তাফিজুর রহমান: ভর্তুকির একটি পুনর্বিবেচনা এবং পুনর্বিন্যাস করার প্রয়োজন আছে এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে কোন খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা উচিত, কোন খাতে প্রত্যাহার করা উচিত, সেটা আমাদের দেশের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। আইএমএফ এক সময় ঢালাওভাবে কৃষি খাতে ভর্তুকি তোলার কথা বলতো। আজকাল কিন্তু তা বলছে না। কিন্তু আমরা মনে করি, ভর্তুকি পুনর্বিন্যাস করা গেলে কোন ফার্টিলাইজার বেশি ব্যবহৃত হয় কিন্তু প্রয়োজন নেই, আবার সেখানে ভর্তুকি বেশি। এ ব্যাপারগুলো পুনর্বিবেচনা করার দাবি রাখে, যা আইএমএফও বলেছে।

বিদ্যুতের কথা যদি বলি, সেখানে পৌনঃপুনিকভাবে মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। এখন আবার নতুন করে ফর্মুলা করে বাজারের সাথে সমন্বয় করে মূল্য বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতে যে ধরনের অপচয় হয়, এখানে যে ধরনের ক্যাপটিভ পাওয়ারগুলোকে বছরের পর বছর ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, এই ধরনের পদক্ষেপের চাপটা কেন ভোক্তার ওপর এসে পড়বে? এই চাপের ফলেই কিন্তু মূল্য বারবার পুনর্নির্ধারণ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলারিটি কমিশন আগে যেমন জনশুনানি করতো, সে জনশুনানিও এখন বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানেও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে যে ধরনের ব্যত্যয় বিচ্যুতি রয়েছে, সেটা যেন কোনোভাবে ভোক্তা, উদ্যোক্তা, উৎপাদকের ঘাড়ে যেন ফেলে দেওয়া না হয়, বরং এখানে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা দরকার কী কী কারণে এ খাতে ভর্তুকিটা প্রয়োজন। কোন জায়গায় ভর্তুকি কমানো যায়, কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে এবং এসব জায়গাগুলোতে নীতি নির্ধারকদের ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার।

সবকিছুর অদক্ষতা যখন ভোক্তা, উদ্যোক্তা, উৎপাদকের ঘাড়ে দেয়, তখন কিন্তু ভোক্তাকল্যাণ কমে এবং উদ্যোক্তা ও উৎপাদকেরা প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সুতরাং অর্থনীতিতে পৌনঃপুনিক একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এগুলো স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি। বাজারের সাথে সমন্বয় করে মূল্য নির্ধারণ করছে ঠিক, কিন্তু তা থেকে সরকার বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করে আবার শুল্কও আদায় করছে। সুতরাং বাজারের সাথে সমন্বয় করলে বাজারের সাথেই করুক, সেখানে বড় ধরনের শুল্ক আদায় করে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। কিছুটা শুল্ক আদায় করা যেতে পারে। কিন্তু বাজারে যখন মূল্য বাড়ে তখন সমন্বয় প্রয়োজন যাতে সহনীয় হয়।

সংবাদ প্রকাশ: বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরে বাজার ব্যবস্থায় মনিটরিংয়ের অভাব দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে আমরা জ্বালানি দারিদ্রের মধ্যে পড়ছি, নগর দারিদ্রের মধ্যে পড়ছি। নতুনভাবে আবার ভর্তুকি দেওয়া হবে, তখন কোনো কিছুর বিচ্যুতি ঘটলে আমরা নতুনভাবে মূল্যস্ফীতির মধ্যে পড়বো কি?  

ড. মোস্তাফিজুর রহমান: আমাদের যে চলমান অবস্থা, তাতে গত দুই বছরে মূল্যস্ফীতি ডাবল ডিজিটে আছে। এখন টার্গেট করা হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে সাড়ে ছয় শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। ইকোনোমির ভাষায় বেস ইফেক্ট বলে টার্ম রয়েছে। আমাদের মূল্যস্ফীতির বেসটা অনেক ওপরে উঠে গেছে। সেখানে কিছুটা মূল্যস্ফীতির হার যদি কমেও মূল্যস্তরটা কিন্তু অনেক ওপরে থেকে যাবে। সেটা কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে। তারপরেও মূল্যস্ফীতির পথে আমাদের হাঁটতে হবে, সেটাতো অস্বীকার করা যায় না।

এখন আমাদের মূল্যস্ফীতির যে চাপ, সেটা কেবলমাত্র আমরা যদি ভোক্তা উৎপাদকের ওপর দিয়ে দেই, মূলকারণগুলো কে অবলোকন যদি না করি, তখন তা একটা দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে যাবে।

মূল্যস্ফীতি শুধু মনিটরিং ফেনোমেনা না বা বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নির্ধারণ করে দিলে মূল্যস্ফীতি কমবে তা কিন্তু নয়। সেটার একটা প্রভাব আছে, পুরোটা নয়।

একদিকে আমাদের এখানে টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে, আমাদের এখানে আমদানিকৃত মূল্যস্ফীতির চাপ কিন্তু অন্তর্নিহিতভাবে অর্থনীতিতে থেকেই যাচ্ছে। এটা অজুহাত দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে বাজার ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।

আমদানি স্তর থেকে বা উৎপাদক স্তরের মাঝে যে মধ্যসত্ত্বভোগীরা আছে, তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে। নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং সমন্বয় করতে হবে।

বাজারের ওপর ছেড়ে না দিয়ে বাজারকে সুসংহত করতে হবে, যেটি এক বাজেটের ব্যাপার না। আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উৎকর্ষতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, আমাদের প্রতিষ্ঠান যেগুলো আছে সেগুলো কার্যকারিতা নিশ্চিতকরণ, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ প্রকাশ: রাজস্ব আদায় নিয়ে জানতে চাচ্ছি।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান: করের আওতা বাড়াতে হবে অবশ্যই, কর ফাঁকির জায়গাগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, যদি ডিজিটালাইজেশন করা যায়, মানুষে মানুষের ইন্টারফেস কমানো যায়, তাহলে আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি। আমাদের রেভিনিউ জিডিপি রেশিও বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন, যা ৮ শতাংশের কাছাকাছি। পাবলিক যে রাজস্ব দেয় তার জিডিপির অনুপাত রেভিনিউর অনুপাত থেকে বেশি, সেটি সবারই জানা। কারণ পাবলিক যেটা দেয় তার পুরোটা সরকারের কাছে যায় না। তাই ডিজিটালাইজেশন এবং ইন্টারফেস কমিয়ে যদি এনবিআরের সাথে যারা তথ্য সংগ্রহ করছে তাদের ইন্টার অপারেবল সিস্টেম করা যায় তাহলে কর ফাঁকি কমিয়ে আনতে পারি। ভারতের আধার কার্ড একটা উদাহরণ হতে পারে। টেকনোলিজক্যালে ইনোভেশনকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়াতে পারি। আমাদের আয় বৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য এবং বিভিন্ন বৈষম্যের একটা বড় কারণ আমরা প্রত্যক্ষ কর সঠিকভাবে আদায় করতে পারছি না। আমরা আশা করবো এবারের বাজেটে এনবিআরের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে বরাদ্দ থাকবে এসব টেকনোলোজিক্যাল ইনোভেশনে কাজে লাগানোর জন্য।

সংবাদ প্রকাশ: বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জটি আসলে কোথায়?

ড. মোস্তাফিজুর রহমান: বাজেটের বাস্তবায়ন সামগ্রিক অর্থনীতির কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। আমরা যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি নিই, তার পুরোটা বাস্তবায়ন করতে পারি না। প্রথমে ডাউনওয়াইড রিভাইস করি, সেটারও পুরোটা বাস্তবায়ন করতে পারি না। এর ফলে বাজেটে নেওয়া প্রকল্প প্রলম্বিত হয়, খরচ বাড়ে, যে রিটার্ন আসার কথা তা আসে না।

এবার যেহেতু নতুন সরকার প্রথম বাজেট দিচ্ছেন, সেখানে নতুনভাবে চিন্তা করার সুযোগ রয়েছে। সম্পদ আহরণ, সম্পদ বণ্টন বিতরণে এক বছরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যায় না, সেটি আমরা বুঝি; কিন্তু বাস্তবায়নের দিক থেকে এর উৎকর্ষতা বিধান, শূন্য সহিষ্ণুতা, কোনো কিছুর ব্যত্যয় হলে আইনের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশক যদি দিতে পারি, তাহলে আমরা বলতে পারি বাজেট বাস্তবায়নও ভালো হবে এবং এর প্রাপ্ত ফলাফলও দেশের অর্থনীতিতে কাজে লাগবে।

তবে আবারো বলছি, বাজেট অর্থনীতির একটি অংশ। আমরা যদি সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আবার আনতে চাই, তাহলে বাস্তবায়নের পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীল অর্থনীতি, নিম্ন মূল্যস্ফীতির দেশ পাবো।

সংবাদ প্রকাশ: আপনাকে ধন্যবাদ।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান: আপনাকেও ধন্যবাদ।