মহামারি করোনাভাইরাস উন্নয়নশীল এশিয়ার প্রায় ৮০ মিলিয়ন মানুষকে চরম দারিদ্রের দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা ২০৩০ সালের ক্ষুধা ও দারিদ্র মোকাবিলার বৈশ্বিক লক্ষ্যে অগ্রগতি থেকে ছিটকে পড়ার হুমকিস্বরূপ।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে।
এডিবি সিমুলেশন করা রয়টার্স প্রতিবেদনে জানায়, উন্নয়নশীল এশিয়ার চরম দারিদ্রের হার অথবা তার জনসংখ্যার অনুপাতের ১.৯০ ডলারেরও কম। যা কোভিড-১৯ আগে ২০১৭ সালের ৫.২ শতাংশ ছিল এবং ২০২০ সালে ২.৬ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু সঙ্কট সম্ভবত গত বছরের অনুমান হারকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রায় ২ শতাংশ পয়েন্ট দ্বারা।
এডিবি এই অঞ্চলের একটি ফ্ল্যাগশিপ রিপোর্টে বলেছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কাজ ব্যাহত হওয়ার অসমতার কারণে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। যা কোভিড -১৯ সঙ্কটের সময় এর গতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ স্থগিত করে আরও গভীর হয়েছে।
ম্যানিলা-ভিত্তিক দাতা বলেন, "যেহেতু ভাইরাসের প্রতিক্রিয়াগুলোর জন্য় আর্থ-সামাজিক প্রভাবগুলো অব্যাহত রয়েছে, ইতোমধ্যেই সংগ্রামরত মানুষ দারিদ্র্যের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।“
এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রিপোর্টিং অর্থনীতির মধ্যে ৪৬ টি উন্নয়নশীল এবং ৩টি উন্নত অর্থনীতির কথা উল্লেখ করে এডিবি সদস্য। এতে বলা হয়েছে, গত বছরে ৪টি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে মাত্র একটি ছিল।
বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অঞ্চলে কর্মঘণ্টার প্রায় ৮ শতাংশ কমে যায়। যা দরিদ্র পরিবার এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের প্রভাবিত করে।
২০১৫ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত বৈশ্বিক উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণের চ্যালেঞ্জকে মহামারির কারণে হওয়া অর্থনৈতিক ক্ষতি আরও তীব্র করে তুলেছিল।
জাতিসংঘের সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পাস করে, যা এসডিজি নামে পরিচিত। ক্ষুধা এবং লিঙ্গ বৈষম্যের অবসান থেকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ পর্যন্ত উচ্চাভিলাষী কাজের একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে তারা। লক্ষ্যগুলোর সময়সীমা ছিল ২০৩০।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুয়ুকি সোয়াদা এক বিবৃতিতে বলেন, "এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় চিত্তাকর্ষক অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু কোভিড -১৯ কারণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক যে ফল্ট লাইন প্রকাশ করেছে, তা এই অঞ্চলের টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে দুর্বল করে দিতে পারে।"