যুক্তরাজ্যের মানুষের জন্য বড় ধরনের কর ছাড় নিয়ে আসছে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের সরকার। রয়টার্স জানায়, সম্প্রতি হাউস অব কমন্সে সংক্ষিপ্ত বাজেট পেশকালে এই ঘোষণা দিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ারতেং।
যুক্তরাজ্যে আয়করের সর্বোচ্চ হার বর্তমানে ৪৫ শতাংশ। নতুন বাজেটে এই হারে ছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২০২৪ সাল থেকে আয়করের ভিত্তি হার ১ শতাংশ কমিয়ে আনা হবে। এতে উপকৃত হবেন প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ।
আবার ইংল্যান্ড ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের যেসব মানুষের বার্ষিক আয় দেড় লাখ পাউন্ডের বেশি, তাদের আয়কর কমবে ৫ শতাংশ। শীর্ষ পর্যায়ের এই কর হৃাসের কারণে প্রায় ৬ লাক ৬০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।
তাছাড়া জাতীয় বিমা পরিকল্প ও স্ট্যাম্প শুল্কেও ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। জাতীয় বিমার প্রিমিয়াম চলতি বছর ১.২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এই বর্ধিতাংশ প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এতে গড়পড়তা পরিবারগুলোর বার্ষিক ৩৩০ পাউন্ড বেঁচে যাবে। স্ট্যাম্প শুল্কের সীমা বৃদ্ধি করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। প্রথমবার বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বাড়ির দাম ৩ লাখ পাউন্ড হলে স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হতো, সেই ভিত্তিমূল্য এখন বৃদ্ধি করে ৪ লাখ ২৫ হাজার করা হবে।
লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকার প্রত্যাশামাফিক এই কর ছাড় ঘোষণা করল, যা সংক্ষিপ্ত বাজেট হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। তবে এই বাজেটকে ধনীবান্ধব বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। নতুন অর্থমন্ত্রী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সব শ্রেণীর মানুষের কথা চিন্তা করেই এই বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
এই বাজেটের মাধ্যমে ২০২৭ সালের মধ্য ৪৫ বিলিয়ন ডলার কর ছাড় দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে সরকারের আয় কমে যাবে এবং ঋণ বৃদ্ধি পাবে।
ধারণা করা হচ্ছে কর ছাড়ের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী জনসাধারণকে ব্যয় করার উৎসাহ দিচ্ছেন। সামগ্রিক ভোগ বাড়ার ফলে অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বাড়বে এবং অর্থনীতি আবারো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে। এই পরিকল্পনা সফল হলে পরে আবার প্রয়োজন হলে কর বাড়ানো যাবে। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে এই পরিকল্পনা কতটুকু সফল হতে পারবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।