আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২, ০২:৫২ পিএম

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শুধু বাংলাদেশই নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও বাংলাদেশিদের জাতির জনকের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হয় খবরটি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, “নিজ দেশের সেনাবাহিনীর হাতেই নিহত হলেনশেখ মুজিব। অথচ তাকে হত্যা করতে পাকিস্তানিরাও সংকোচবোধ করেছে।”

দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা জানায়, “শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।”

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়য়, “রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করেছে সেনা সমর্থিত সরকার। বিদ্রোহীরা দারিদ্র্যপীড়িত দেশটির রাষ্ট্র্রপতি, স্বাধীনতা আন্দোলনের জনক ও বামপন্থি নেতা মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে।”

মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসির খবরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বলা হয়, “বাংলাদেশের জাতির পিতা ও স্বাধীনতার নেপথ্যের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন। ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে মুজিবের সম্পর্কবিরোধী খন্দকার মুশতাক আহমেদ দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। দেশের নাম বদলে তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রেখেছেন।”

এবিসি নিউজের শিরোনামে বলা হয়, বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থানে নিজ বাড়িতে নিহত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান। প্রাণ হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যরাও। বঙ্গবন্ধুর শেখ মন্ত্রিসভার সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ক্ষমতা দখল করেছেন।”

কানাডার সিবিএস নিউজ জানায়, “আকস্মিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনা সমর্থিত সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করেছে। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হয়েছেন। দেশে সেনা শাসন ও কারফিউ জারি করা হয়েছে।”

স্বাধীনতা দিবসের ছুটি থাকায় সেবছরের ১৬ আগস্ট ভারতে কোনো পত্রিকা প্রকাশিত হয়নি। তবে ১৭ আগস্ট আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনামে বলা হয়, “বন্ধুর মৃত্যুতে শোকাহত ভারত।”

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পেছনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ জড়িত ছিল বলে দাবি করে কলকাতার যুগান্তর পত্রিকা। দিল্লি থেকে প্রকাশিত অন্যান্য পত্রিকাতেও বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে নিহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ পায়।

তবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় বিপরীত চিত্র দেখা গেছে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি পাকিস্তানের গণমাধ্যমে। ১৮ আগস্ট পাকিস্তানের উর্দু পত্রিকা ‘জং’-এর সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের সেনা শাসনকে স্বাগত জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং ৫০ হাজার টন চাল ও ১০ মিলিয়ন গজ সুতা উপহার দেয়।