চলতি বছর শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতি ছাড়াবে ৭০%

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২২, ০৬:৪৯ পিএম

যতই দিন যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতির সঙ্গে দেশের জনগণের আর্থিক অবস্থা তীব্রভাবে সংকুলান হচ্ছে। বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতির হার। ইতিমধ্যেই নিজের দেশকে দেউলিয়া হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ।

দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়ার প্রবণতা চলমান থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. নন্দনাল বিরাসিংহ। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

কলম্বোতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে সতর্ক করে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. নন্দনাল বলেন, “বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ ব্যবসা বড় সমস্যার সম্মুখীন হবে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।”

তিনি আরও বলেন, “এই সময়ে দরিদ্রদের সাহায্য করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির দিকে নজর দেওয়া হবে। অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে ৫ জুলাই দেশের সংসদে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ বলেন, “দেশের ধসে পড়া অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করা ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে। কারণ ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপরাষ্ট্রটিকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে না দেখে দেউলিয়া দেশ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।”

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার জানান দিয়ে তিনি আরও বলেন, “চলতি বছরের শেষে আমাদের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে দাঁড়াবে ৬০ শতাংশে। এটি এক কঠিন ও তিক্তা পথচলা হবে। তবে আমাদের স্বস্তি ফিরে আসবে, অগ্রগতিও ফিরে আসবে।”

সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ কমে এসেছে। ফলে ডলার ফুরিয়ে যাওয়ায় খাদ্য, ওষুধ ও জ্বলানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।

দেশটির স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জ্বালানি নির্ভর প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোসহ বেশ কয়েকটি বড় শহরে শত শত মানুষ জ্বালানি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছে না। কখনো কখনো পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে তারা।