বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে বিরল রোগ মাঙ্কিপক্স। এতদিন আফ্রিকার কিছু দেশে থাকলেও এখন নতুন করে ২০ দেশের বেশি শনাক্ত হয়েছে। আর এই ভাইরাসের বিস্তার সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)।
মঙ্গলবার (৩১ মে) পাঠানো এক বিবৃতিতে ডব্লিওএইচও জানায়, সংস্থাটির লক্ষ্য এখন মানুষের থেকে মানুষে সংক্রমণ যতটা সম্ভব বন্ধ করে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা। কারণ, অবিলম্বে সব দেশে এই রোগের টিকা সরবরাহ করা এই মুহুর্তে অসম্ভব। এছাড়া এই ভাইরাস রোধে অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সরঞ্জাম পাওয়াও দুষ্কর।
বিরল রোগটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দুর্গম এলাকায় পরিচিত। বিশ্বের অন্যান্য স্থানে মাঙ্কিপক্সের উপস্থিতি ছিল বিরল। যা এবার দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তারা আফ্রিকা ভ্রমণ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেউ কেউ ভ্রমণকারীর সংস্পর্শে এসেও আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ২০ টির বেশি দেশে ৩০০-এর বেশি মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এসব দেশে এর আগে কখনোই এই ভাইরাস দেখা যায়নি।
এশিয়া প্যাসিফিকে অস্ট্রেলিয়ায় শনাক্ত হয়েছে মাঙ্কিপক্স। সেখানে ২০ মে প্রথম রোগী পাওয়া যায়। ইউরোপে অস্ট্রিয়ায় ২২ মে এক মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত পাওয়া যায়। বেলজিয়ামে ২০ মে দুইজন আক্রান্ত মিলে। ২৪ মে চেক রিপাবলিক প্রথম মাঙ্কিপক্সের আক্রান্তের খবর জানায়। একই দিন ডেনমার্কে দুইজন আক্রান্তের সন্ধন মেলে। প্রতিবেশী ফিনল্যান্ডে ২৭ মে প্রথম এই ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়। ফ্রান্সে ২৫ মে এর মধ্যে পাঁচ আক্রান্ত পাওয়া যায়। জার্মানি এখন পর্যন্ত তিনজন আক্রান্ত নিশ্চিত করেছে, প্রথমটি ২০ মে শনাক্ত হয়।
২৪ মে আয়ারল্যান্ড প্রথম আক্রান্ত নিশ্চিত করেছে। ইতালি ২৭ মে পর্যন্ত ১২জন আক্রান্ত নিশ্চিত হয়েছে। নেদারল্যান্ডস ২০ প্রথম শনাক্ত হয়। পর্তুগাল ৩১ মে চারজন আক্রান্ত নিশ্চিত হয়। স্লোভেনিয়ায় ২৪ মে প্রথম মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত শনাক্ত হয়। স্পেন ৩১ মে ১২ জন এই বিরল আক্রান্তের খবর জানায়। সুইডেন ১৯ মে প্রথম আক্রান্ত নিশ্চিত করেছে। সুইজারল্যান্ড ২১ মে প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত করে। যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত হয় ৭ মে, এখন পর্যন্ত ৭১ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার মতে, মাঙ্কিপক্স বিরল ভাইরাল সংক্রমণ। এই ভাইরাস খুব বেশি মারাত্মক না। আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভাইরাসটি সহজে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে না।
মাঙ্কিপক্সের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন নেই। তবে গুটিবসন্তের জ্যাব এই ভাইরাস থেকে ৮৫ ভাগ সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম। কারণ দুটি ভাইরাস বেশ একই রকম।