ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২০ বছরের ইতিহাস ভেঙেছেন এমানুয়েল ম্যাখোঁ। দেশের ইতিহাসে দেড় যুগ পর কোনো নেতা টানা দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন তিনি। এরমধ্যে ফের ৫ বছরের ফরাসিদের নেতৃত্বের দায়িত্ব পেলেন ম্যাখোঁ। তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বে লড়াই করেন ইইউপন্থী সমাজতান্ত্রিক এমানুয়েল ম্যাখোঁ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কট্টর ডানপন্থি মেরি লা পেন। যিনি ইইউ বিমুখ নেতা হিসেবে পরিচিত। এর আগে সবশেষ ২০১৭ সালের নির্বাচনেও ম্যাখোঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে হেরে যান লে পেন। তবে সেবার চেয়ে এবার ভোটের ব্যব্যধান অনেক বেশি গড়েছেন তিনি।
নির্বাচনের আগে ইইউ থেকে ফ্রান্সকে বেরিয়ে আনতে তোরজোড় শুরু করেন লে পেন। তার ন্যশনাল র্যালি পার্টিও একই দাবি নিয়ে মাঠে নামে। নিজেদের স্বার্থ বৃদ্ধিসহ নানা দাবি সামনে নিয়ে আসেন তারা। অন্যদিকে শুরু থেকেই জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধির ওপর জোর দেন ম্যাখোঁ। একইভাবে ইইউ এর সঙ্গে সম্পর্ক আরো উন্নত করার প্রয়াস ছিল তার।
রোববারের নির্বাচনে ৫৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন ম্যাখোঁ। কট্টর ডানপন্থী মেরি লা পেন পান ৪১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট। ফল প্রকাশের পর ম্যাখোঁকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সরকারপ্রধান ও শীর্ষ নেতারা। এর মধ্যে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল, বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী সবার আগে ম্যাখোঁকে অভিনন্দন জানান।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল বলেন, এই সংকটময় সময়ে আমরা আরও বেশি সুসংহত ইউরোপ ও ফ্রান্স চাই। যারা কৌশলগত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংহতিকে শক্তিশালী ও জোরালো করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। ইইউবিদ্বেষী ও পুতিনের ভক্ত লা পেন নির্বাচিত হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ইইউ নেতা হিসেবে ৬ মাসের জন্য মনোনীত ম্যাখোঁর হাতে এখনও দুই মাস সময় বাকি আছে। এই সময় পুতিনের বিরুদ্ধে ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা ম্যাখোঁর মাধ্যমে আরও সুসংহত হবে। ম্যাখোঁর জয়কে অনেকে ইউরোপীয় নেতারা ইইউর জয় বলে উল্লেখ করেন।