ঠিক ১০ বছর আগে লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এক তরুণ ছাত্র। বিভিন্ন সংবাদের শিরোনামে এসেছিল তার সাক্ষাৎকার।
ইউনিভার্সিটি অব চিলির আইন বিভাগের সেই ছাত্র গ্যাব্রিয়েল বোরিক এবার দেশের নেতৃত্ব দিতে চলেছেন। রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী এই নেতা।
দেশের জন্য উচ্চাভিলাষী পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তরুণ রাষ্ট্রনায়ক। অসমতা দূর করার পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনে বিজয়ের পর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বোরিক বলেন, “আমরা এমন এক প্রজন্ম যারা জন্মের পর থেকেই মানুষের অধিকারকে সম্মান করতে শিখেছি। জনগণকে ভোগ্যপণ্য বা ব্যবসার মূলধন ভাবতে শিখিনি।”
বোরিকের এ জয়কে দেশটিতে বামপন্থীদের উত্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেননা ক্ষমতায় আসার আগেই তিনি চিলির ‘উদার’ অর্থনীতির মডেলকে মাটিচাপা দিয়ে সমতা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ধনী-গরীব সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব আমরা। গরীবদের আর কখনো চিলির অসম অর্থনীতির জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে না। চিলি যদি উদার অর্থনীতির জন্মস্থান হয়, তাহলে এর কবরও এখানেই হবে। আজ তরুণরা দেশকে বদলে দিতে এসেছে। আমাদের ভয় পাবেন না।”
সাবেক ছাত্রনেতা গ্যাব্রিয়েল বোরিক এখন চিলির সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাদেরও একজন তিনি।
২০১৯ সালে দেশটির অর্থনীতিক অবকাঠামো সংস্কারের দাবিতে ডাকা বিক্ষোভেরও সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দেন তিনি। নির্বাচনে তার জয়কে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রোববার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ডানপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী হোসে আন্তোনিও কাস্টকে পরাজিত করেন বোরিক। দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর এটিই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত নির্বাচন।
ভোট গণনা শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা পরই পরাজয় স্বীকার করে নেন কাস্ট। প্রাথমিক ফলাফলে সাবেক ছাত্রনেতা বোরিক শতকরা ৫৬ ভাগ ও কাস্ট ভোট পেয়েছেন ৪৪ ভাগ।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স ও ইন্টারনেট