পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভে’ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ইমরান সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
ইমরান সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে চারজনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নেমেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরপরও রাস্তা থেকে সরানো যাচ্ছে না বিক্ষোভকারীদের।
এদিকে ইসলামাবাদের ডি চকে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই)।
জিও নিউজ বলছে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের একটি অংশ সেখানে পৌঁছেও গেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও কঠোর হতে বলেছে প্রশাসন। সেখানে রয়েছেন নিরাপত্তাবাহিনীও। টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
[105217]
জিও নিউজ আরও বলছে, মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি বলেছেন, সরকার সব উপায়ে পিটিআই নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা কেবল আলোচনা থেকে আরও সময় পেয়েছে এবং রাজধানীর দিকে এগিয়ে গেছে।
এ কারণে পরিস্থিতি যেকোনো উপায়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে ইসলামাবাদের আইজিকে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি।
এদিকে সংঘাতের মধ্যেই মুলতান, রাজনপুর, গুজরাট ও আরও কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বিঘ্ন ঘটছে।
সোমবার পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে ৪ হাজারের বেশি পিটিআই নেতাকর্মীকে আটক করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহিদ নওয়াজ জানান, আটকদের মধ্যে পাঁচজন পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন।
এ দিকে মঙ্গলবার সকালে ইসলামাবাদ অভিমুখে গাড়ি বহর নিয়ে রওনা দেয় ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি এবং খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর। ইসলামাবাদের ডি চক এলাকায় সমাবেশ করতে যাচ্ছেন তারা।
ইমরান খানের মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মাসের শুরুতে কারাগার থেকে সমাবেশের ডাক দেন ইমরান খান। একে তিনি ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে অভিহিত করেছেন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে ইমরানের সমর্থকেরা।
সমর্থকদের দাবি, ইমরান খানসহ পিটিআই দলের যে নেতারা বন্দি আছেন, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদসহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ইমরান খানের দল এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে।
২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন ইমরান। তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
পিটিআইয়ের দাবি, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দলের নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় এর আগেও দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে পিটিআই সমর্থকেরা।