দ্বৈরথ

নুরুজ্জামান মানিক প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৪, ০৫:২৮ পিএম

ওদের সাথে পরিচয় হয়েছিল শৈশবেই। কিন্তু ঠিক কত বছর বয়সে, এখন আর তা মনে নেই। ওরা যমজ বোন। অবশ্য যমজ হলেও দেখতে কিন্তু এক রকম নয়। একজন অপরূপা জাদুকরি, অন্যজন কুৎসিত কৃষ্ণবর্ণের।

ওরা দুজনেই আমার প্রেমে পড়েছিল এবং আমাকে চেয়েছে। কিন্তু আর দশজনের মত আমিও সুন্দরীর দিকেই ঝুঁকেছিলাম। ওই রমণী যাকে আমার হৃদয় কামনা করে, সে এক অনুপম সৃষ্টি, যাকে দেবতারা পায়রার যুগলবন্দী প্রেমে রূপ দিয়েছেন। তাকে নিয়েই কবিতা লিখি, আবৃত্তি করে শোনাই স্বরচিত কবিতা, শীতলক্ষ্যা নদীতে ভরা পূর্ণিমায় করি নৌভ্রমণ, শাহবাগে ফুচকা খাই।

এদিকে ওর যমজ কুৎসিত বোনটি কিন্তু আমার পিছু ছাড়েনি। শুনেছি কালো মেয়েরা পুরুষ বশীকরণমন্ত্র জানে। সেই মন্ত্রবলে সে আমায় বাহুবন্দী করতে চেয়েছে বারবার। মাস কয়েক আগেও সে হঠাৎ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “এবার তোমাকে ছাড়ছি না, তোমাকে এবার আমার সাথে ঠিকই নিয়ে যাবো।” উপায়ন্তর না দেখে মেয়ে ভোলানো মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তাকে কোনমতে বিদায় করেছি।

তারপর যথারীতি আমার প্রেয়সী সুন্দরীর সাথে পথচলা। এবার একটু বেশিই ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম। তার দেহের প্রতিটি বাঁক পড়ে ফেলেছিলাম। ফলে তার অন্তর্গত সত্ত্বাটিও দেখে ফেলেছি। ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে সে ক্রমশঃ আমার থেকে দূরে, বহুদূরে চলে যাচ্ছে।

যে রমণীকে আমার হৃদয় ভালোবাসে, তার নাম জীবন।
জীবন এক সুন্দর রমণী, যে আমাকে একাত্ম করে নেয়।
জীবন হচ্ছে এক রমণীর নাম—
যে মানুষের হৃদয়কে বন্ধু বানায়, কিন্তু স্বামী বানায় না।
জীবন হচ্ছে এক খল কিন্তু সুন্দর রমণী।
যে তার খল প্রকৃতি দেখে ফেলে
সে তার সৌন্দর্যকে ঘৃণা করতে শিখে।

‘জীবনের প্রতি আমার ঘৃণা জন্মেছে’ এই সংবাদটি জেনেই ছুটে এসেছে তার সহোদরা মরণ। ওই তো কালো কুৎসিত মৃত্যু নামক মেয়েটি দরজায় দাঁড়িয়ে। এবার তাকে ফিরাবো কীভাবে?