স্বাভাবিক নিয়মে নিয়মিত ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড চক্র ২৮ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যেই হয়। ৪ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে ৩৫ দিন পরেও যদি পিরিয়ড শুরু না হয় এবং প্রতিমাসেই বেশি দিনের ব্যবধান থাকে তা অনিয়মিত বলে গণনা করা হয়।
নারীদের একটি সাধারন সমস্যা অনিয়মিত পিরিয়ড। যারা অবিবাহিত তাদের এমন সমস্যা বেশি হয়। এতে শরীরে নানা সমস্যাও হতে পারে। ঘাবড়ে না গিয়ে ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু উপায়ে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। তবে তা অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।
প্রথমে আগে নিশ্চিত হতে হবে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হচ্ছে কিনা। এরজন্য কিছু উপসর্গ খেয়াল করুন- মাসিক চক্রের সময়কাল ৩৫ দিনেরও বেশি হয় কিনা, পরপর তিন মাস এমনটা হচ্ছে কিনা, অত্যধিক রক্তপাত এবং জমাট বাঁধা রক্ত বের হচ্ছে কিনা, পেটে ব্যথা এবং কোমর ও পিঠে প্রচন্ড যন্ত্রণা হয় কিনা।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব কেন হয়? চিকিৎসকরা জানান, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, গর্ভনিরোধক ঔষধের ব্যবহার, স্থূলতা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন - অগোছালো জীবনযাত্রা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, দুশ্চিন্তা এবং স্ট্রেস, থাইরয়েড ডিসঅর্ডার, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম প্রভৃতি কারনে এমনটা হতে পারে।
বোল্ডস্কাই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘরোয়াভাবে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমাধান পাওয়া যেতে পারে-
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কাঁচা আদা খেতে পারেন। আদা জরায়ুর পেশী সংকোচনে সহায়তা করে এবং হরমোনের ভারসাম্যও ঠিক রাখে। সকালে অথবা সন্ধ্যায় খালি পেটে, লেবুর রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে এক গ্লাস গরম আদা চা পান করলে উপকার পাবেন।
গুড়ের নিয়মিত সেবন অনিয়মিত ঋতুচক্র নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। এটি জরায়ুর ক্র্যাম্পস কমাতেও সহায়তা করে।
হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-স্প্যাসমডিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান, যা জরায়ুর ক্র্যাম্পস হ্রাস করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন হালকা গরম দুধে হলুদ ও মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
অ্যালোভেরা জুস মাসিক নিয়ন্ত্রণে এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে দুর্দান্ত কাজ করে। এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। অনিয়মিত ঋতুস্রাব চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সহায়তা করে। তবে মাসিক চলাকালীন অ্যালোভেরা ব্যবহার করবেন না। এটি জরায়ু সংকোচন বাড়িয়ে তুলতে পারে।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার দুর্দান্ত কাজ করে। এটি ওজন কমাতে এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের সাথে মধু মিশ্রিত করে খেতে পারেন।
জরায়ুতে রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে দারুচিনি সহায়তা করে। অনিয়মিত ঋতুস্রাব চিকিৎসা করতে পারে। এমনকি ঋতুস্রাবের কারণে হওয়া পেটে ব্যথা এবং বমি ভাব কমাতেও সাহায্য করতে পারে। এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে সেবন করতে পারেন।
গবেষণা অনুযায়ী, যোগব্যায়াম করলে মেনস্ট্রুয়াল পেন এবং পিরিয়ডস সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা কমাতে পারে। ডিপ্রেশন ও উদ্বেগ কমাতেও সহায়তা করে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রেও শরীরচর্চা অত্যন্ত কার্যকর। এক্সারসাইজ করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।