১৬ অক্টোবর শনিবার বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্বজুড়ে সব মানুষের খাদ্য নিশ্চিত ও সুষম, পুষ্টিকর খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা জানাতেই পালিত হয় এই দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো- ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ- ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশেই উন্নত জীবন’।
শরীর ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পুষ্টিকর ও সুষম খাবারের প্রয়োজন। অসুখ থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের ভিটামিন জাতীয় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিৎ। বিভিন্ন রঙ্গিন ফল, ডিম, বাদাম, বিভিন্ন সবুজ ও রঙ্গিন শাকসবজি, বীজ জাতীয় খাবার, মাছ ও মাংস পরিমাণ মতো খেতে হয়।
প্রতিদিন খাবার রান্না করার সময় বা কাঁচা খাওয়ার সময় পুষ্টিগুণের খেয়াল রাখি না। কোন খাবারে কতটা পুষ্টি পাচ্ছি তা নিয়ে ধারণা থাকে না। এছাড়াও কীভাবে ফলমূল ও শাকসবজি কেটে খেতে হয়, কীভাবে রান্না করলে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে, কীভাবে জীবানুমুক্ত করতে হয়, নিয়মিত খাবার খাওয়া কেন প্রয়োজন তা আমরা অনেকেই জানি না। এসব বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকা চাই। তবে স্বাস্থ্য ও ত্বক সুন্দর থাকবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না, শক্তি বৃদ্ধি করে, ত্বক ভালো রাখে, তারুণ্য ধরে রাখে, ভালো ঘুম হয়, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণ- সি, ই, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন ও খাদ্য আঁশ থাকে। খনিজ লবণ এবং অন্যান্য জরুরি ভিটামিনও থাকে। শরীর সুস্থ-সবল রাখতে এগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
রান্নার করার সময় খাবারের পুষ্টিগুণ কমে যেতে পারে। সঠিক নিয়ম মেনে রান্না বা সংরক্ষণ করলে খাবারের পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে। পুষ্টিগুণ ঠিক রাখতে তাই সঠিক নিয়ম মানুন_
শুকনা খাবার বেশিদিনের জন্য কিনে রাখতে পারেন। কাঁচা জাতীয় শাকসবজি অথবা ফলমুল বেশিদিন রাখা ঠিক নয়। পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। শাকসবজি ৩ থেকে ৪ দিনের জন্য কিনে রাখতে পারেন।
ফল ও শাক-সবজি কাঁটার আগে ধুয়ে নিন। কাটার পর ধুলে ভিটামিন কমে যায়।
সবজি বেশি পাতলা করে কাটবেন না। যদি ধোয়ার আগে কেটে ফেলেন, তাহলে বেশি সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখা ঠিক না। সাথে সাথে ধুয়ে তুলে রাখুন।
সবজি খোসাসহ রান্না করলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। খোসা ফেলে রান্না করতে চাইলে পাতলা করে কেটে নিন।
প্রতিদিন তাজা শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম ও যেকোন খাবার রান্না করে খাওয়া ভালো।
ভাতের মাড় ফেলে দিলে পুষ্টিগুণ কমে যায়। বসা ভাত রান্না করে খান। কুকারে রান্না করতে পারেন।
শাকসবজি সিদ্ধ করে পানি ফেলবেন না। কারণ শাকসবজিতে পুষ্টি উপাদান থাকে কমে যায়।
রান্নার সময় সব মসলা দিয়ে কষিয়ে নেওয়ার পর গরম পানি দিয়ে সবজি দিবেন। বেশি সময় ধরে রান্না বা সিদ্ধ করবেন না। ঠাণ্ডা পানি দিলে তা গরম হওয়ার পর রান্না করুন।
শাক-সবজির রং ঠিক রেখে রান্না করবেন। সব সময় শাক ও সবজি তেল দিয়ে রান্না করবেন এবং সবজিতে যে ভিটামিন থাকে তা তেলের সাথে সহজেই মিশে যায়। যেকোনও খাবার ঢেকে রান্না করবেন।
পুরানো তেল অথবা পোড়া তেল পরেরদিন রান্নায় ব্যবহার করবেন না।
কাঁচা সবজি খেলে আরও বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। প্রতিদিন বিভিন্ন সবজি মিশিয়ে সালাদ বানিয়ে খান।
ফ্রিজে রাখা ফল ও শাকসবজির ভিটামিন কমে যায়। খাবার বেশিদিন ফ্রিজে থাকলেই গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়।
ফ্রিজে খাবার বক্সে ভরে রাখবেন বা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখবেন। খাবার বারবার গরম করে খেলেও ভিটামিন কমে যায়।
খাবার তৈরি বা খাওয়ার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিবেন। যে পাত্রে রান্না করবেন তা ভালো করে ধুয়ে নিবেন। যেন জীবানুমুক্ত হয়।
চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার, বাইরের খাবার কম খাবেন। খাবারে তেল ও মসলা কম ব্যবহার করুন। পানি বেশি খাবেন। পানি জাতীয় ফলমূল খাবেন।
বাজারে অনেক ধরনের মসলা পাওয়া যায়। ভেজালমুক্ত বা কেমিক্যালমুক্ত মসলা কিনা দেখে কিনবেন।