শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর শরীরে নানা বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। নবজাতকের ত্বক কোঁচকানো হবে এবং দেহে কিছুটা চুল থাকবে। এই চুলগুলো অস্থায়ী। যা শিগগিরই চলে যায়।
নবজাতকের দেহে পাওয়া এই চুলগুলো ল্যানুগো বলে। ল্যাটিন শব্দ ‘লানা’ থেকে এটি এসেছে। এই চুল শিশুর পিঠ, কান, ঘাড়, মুখ এবং কাঁধে দেখা যায়। গর্ভে থাকা অবস্থায় এই চুলগুলো শিশুদের প্রাকৃতিক নিরোধক হিসেবে কাজ করে। জন্মের পর এটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অদৃশ্য হয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
যেসব শিশু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জন্মায় তাদের ল্যানুগো বা চুলের পরিমাণ বেশি থাকতে পারে। কারণ শিশুর দেহের চুলের এই বিকাশ শুরু হয় যখন ভ্রূণ ১৮ থেকে ২০ সপ্তাহ বয়সী হয়। এই সূক্ষ্ম চুলগুলো গাঢ় বর্ণবিশিষ্ট শিশুদের ওপর বেশি দৃশ্যমান হয়।
ল্যানুগো বা নবজাতকের দেহে মায়ের গর্ভে থাকার সময় একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। গর্ভস্থ অবস্থায় থাকা শিশুর ত্বক ভার্মিক্স নামক একটি মোমের মতো স্তর দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। যা শিশুকে উষ্ণ রাখে এবং তার ত্বক আর্দ্র রাখে। সহায়তা করে। শিশুর জন্ম সহজ করতে এটি সাহায্য করে।
গর্ভে থাকা সময় থেকে জন্ম হওয়া পর্যন্ত শিশুদের শরীরে জমা হওয়া পদার্থকে ভার্মিক্স বলে। ল্যানুগো শিশুর ত্বকের সঙ্গে ভার্মিক্সকে কার্যকরভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
গর্ভে বৃদ্ধির সময় শিশুর দেহের জন্মানো এই চুলগুলো শিশুর মৃদু ত্বকের সুরক্ষা করে।
শিশুর উপর অ্যামনিওটিক তরলের যে কোনো প্রভাব প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে ল্যানুগো।
নবজাতক শিশুর দেহে এই চুল নিজ থেকেই চলে যায়। তবে কিছু শিশুর ক্ষেত্রে ল্যানুগো বেশি সময় স্থায়ী হলে তা প্রতিকারে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ_
শিশুর দেহে তেল মৃদুভাবে মালিশ করুন। এতে দেহের চুল হ্রাস পাবে। সকালে এবং সন্ধ্যায় দুই বার পুনরাবৃত্তি করুন। অলিভ ওয়েল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
হলুদ গুঁড়া, দুধ এবং চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট বানান। শিশুকে গোসল করানোর আগে এটি লাগিয়ে নিন। শরীরের যে অংশে ল্যানুগো বেশি থাকবে সেখানে বেশি করে লাগিয়ে নিবেন।
দুই টেবিল চামচ গমের আটা এবং এক টেবিল-চামচ বেসন মিশিয়ে নিন। এতে পানি মিশিয়ে নিন। গোসলের আগে শিশুর গায়ে আস্তে আস্তে মিশ্রণটি ঘষে নিন। উপকার হবে।
আধা কাপ দুধে ডাল ও কাজুবাদাম মিশিয়ে তা শিশুকে গোসলে আগে গায়ে লাগান। এরপর ভালোভাবে গোসল করিয়ে নিন। কয়েকদিনের মধ্যেই ফলাফল দেখতে পাবেন।