বাবা-মায়ের ওপরেই অনেকটাই নির্ভর করে শিশুর সুস্থ, সম্পূর্ণ বিকাশ। ছোটবেলা থেকে তাদের যথাযথ ভাবনায় এবং সুস্থ পরিবেশে বড় করে তোলার দায়িত্ব তাদেরই। সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে তাদের ভ্রান্ত ধারণা দূর হওয়া আবশ্যক। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু ভুল ধারণা, যা আমরা সন্তান লালন-পালনে প্রতিনিয়ত মেনে চলছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান জানাচ্ছেন বিস্তারিত।
ঘন ঘন খাওয়ানো ভালো
ঘন ঘন খাওয়ালে বাচ্চাদের খিদে মরে যায়। এর ফলে বাচ্চারা খাবার ঠিকমতো খেতে পারে না। ফলে হিতে বিপরীত হয়।
কাজলের টিপ না পরালে নজর লাগে
এটা একদমই ভুল ধারণা। কাজলের টিপ হলো পোড়া কার্বন। তাই রাস্তার গাড়ির ধুলো, ধোঁয়া যতটা খারাপ, কাজলের টিপও ততটাই খারাপ।
সাবান দিলে ঠান্ডা লেগে যায়
সাবান দিলে ঠান্ডা লাগে না। কিন্তু কড়া সাবান ব্যবহার করলে, সেটা নাকে গেলে নাক থেকে পানি পড়ে। তাই মনে হয় যে সাবান থেকে ঠান্ডা লেগেছে।
বাচ্চাকে মাঝরাতে একবার খাওয়ানো উচিত
অনেকেই বাচ্চাকে মাঝরাতে টেনে তুলে খাওয়ান। তাদের ধারণা, মাঝরাতে না খেলে বাচ্চার খিদে পাবে। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। খিদে পেলে বাচ্চা নিজেই ঘুম থেকে জেগে যাবে। আর মাঝরাতে টেনে তুলে খাওয়ালেই স্বাস্থ্য ভালো হয়ে যায় না।
নিউমোনিয়া হলে বেশি জামাকাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখতে হয়
নিউমোনিয়া হলে বাচ্চাকে বেশি জামাকাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখার কোনো দরকার নেই। যতটা কাপড় পরলে বাচ্চা আরাম পায় ততটাই পরান। অতিরিক্ত জামাকাপড় বাচ্চা খুলে ফেললে আর পরাবেন না।
ছোট থেকে মাথায় তেল লাগালে চুল ভালো হয়
চুল ভালো হওয়ার সঙ্গে তেল লাগানোর কোনো সম্পর্ক নেই। বেশি তেল লাগালে বরং চুল ময়লা হয়ে যায় কিংবা বাইরের ধুলো মাথায় বসে যায়।
বাচ্চাদের শরীরে সর্ষের তেল মাখাতে হয়
সর্ষের তেল খুব পুরু হয়। এর জন্য বাচ্চাদের শরীরে র্যাশ বের হয়। এছাড়া শরীর ময়লাও হয়ে যায়। শরীরে সংক্রমণ হতে পারে। সরিষার তেলের ঝাঁঝও বেশি থাকে। তাই সর্ষের তেল না দিয়ে বেবি অয়েল বা অলিভ অয়েল দেওয়া উচিত। তাও বাচ্চার বয়স দেড় মাস হয়ে যাওয়ার পর। কারণ জন্মের পর শিশুর ত্বক অনেক পাতলা থাকে। তাই এসময় তেল লাগালে ত্বকের নানা সমস্যা হয়।