গর্ভাবস্থায় যে ভুল করে নারীরা

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২, ০২:১১ পিএম

গর্ভকালীন মায়ের শরীরে বাড়তি যত্ন প্রয়োজন হয়। হরমোনের ব্যাপক পরিবর্তন হয়। ফলে শরীর ও মনের পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া, অন্যান্য অংশের পরিবর্তন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর মুড সুইংয়ের কারণে মেজাজ চড়াও হওয়া, কেঁদে ফেলা, চিত্কার করাও স্বাভাবিক ঘটনা। গর্ভাবস্থায় নারীদের এই স্বাভাবিক ঘটনাগুলো মেনে নিতে হয়। আর খুব সাবধানে চলতে হয়।

গর্ভাবস্থায় নারীদের কিছু বিষয়ে সাবধানও থাকতে হয়। যেমন কিছু বিষয় মেনে চলতে হয়। ছোট্ট ভুলের কারণে বড় কোনও বিপদ হতে পারে। কিংবা মানসিক অশান্তি বেড়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনেক সাবধানতার পরও কিছু ভুল হয়েই যাচ্ছে। এর জন্য় পরিবার ও স্বজনদেরকেও হবু মায়ের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় মায়ের যে ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে তা জানাব এই আয়োজনে।

দুশ্চিন্তা

গর্ভাবস্থায় মায়েদের দুশ্চিন্তা করা একেবারেই ঠিক নয়। কোনো ধরণের মানসিক চাপ নিলে তা অনাগত সন্তানের ওপর প্রভাব পড়ে। এই অবস্থায় কোনো মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নেওয়া যাবে না। গর্ভকালীন ওজন নিয়েও অনেক মা চিন্তায় থাকেন। এই সময় ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আর হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে ওজন বেড়ে যায়। তাই এটা দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নয়। যতটা সম্ভব মন শান্ত রাখতে হবে এবং হাসিখুশি থাকতে হবে।

সময়মতো খাবার না খাওয়া

গর্ভাবস্থায় খাবার এড়িয়ে যাওয়া ক্ষতিকর। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর খাবার। এই সময় খাবারে অরুচি হতে পারে। আবার অনেকে ক্ষুধা বেড়ে গিয়ে অতিরিক্ত খাবারও খেতে পারেন। কোনোটিই ঠিক নয়। সময়মতো প্রয়োজনীয় খাবার খেতে হবে এই সময়। সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম কয়েক মাস শিশুর গঠন ও বিকাশ হতে থাকে। এই সময় মা পুষ্টিকর খাবার পেলে সন্তান সুস্থ জন্ম হবে। সময় মেনে খাবার খেতে হবে। শিশুর বিকাশে  খনিজ ও পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। 

 চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন

গর্ভাবস্থায় শরীর পরিবর্তন হয়। তাই এই সময় পেশি ব্যথা, ফোলাভাব, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের সমস্যা হতে পারে। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দেয়। যেকোনও সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ খাওয়া যাবে না। এতে ক্ষতি হতে পারে। 

অলস সময় পার করা

গর্ভাবস্থায় শরীরিক দুর্বলতা থাকে। কিন্তু অলস সময় পার করা যাবে না। গর্ভাবস্থায় বিশ্রাম প্রয়োজন। সেই সঙ্গে শরীরকে কর্মক্ষমও রাখতে হয়। ঘরেই হালকা ব্যায়াম করা যায়। তাছাড়া হাটাহাটির অভ্যাস করুন। যখনই ভালো লাগবে হাঁটুন। ঘরে হালকা কাজগুলো করুন। সব সময় বসে বা শুয়ে থাকবেন না। বই পড়ুন। জ্ঞান বাড়ে এমন সব কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। যতটা সম্ভব সক্রিয় থাকুন।

স্বাস্থ্যসেবায় অবহেলা

ভালো স্বাস্থ্যসেবা সুস্থ মা ও সন্তানের জন্য জরুরি। নিয়মিত চেকআপ করাতে হবে। শারীরিক সুস্থতার জন্য বিভিন্ন চেকআপ করিয়ে নিন। গর্ভকালীন কোনও জটিলতা থাকলে তা কাটিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নিতে থাকুন। কোন হাসপাতালে, কোন ডাক্তারের কাছে ডেলিভারি করাবেন তা আগেই ঠিক করে রাখুন। অবহেলা করবেন না। 

অ্যালকোহল বা ধূমপান

গর্ভাবস্থায় অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। এমনকি চিনিযুক্ত খাবারও খাবেন না। অ্যালকোহল, ক্যাফেইন বা ধূমপান করা যাবে না। এই সময় পরোক্ষ ধূমপানও ক্ষতিকর। এসব বিষয়ে অবহেলা করলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম না নেওয়া

গর্ভাবস্থায় নারীদের দৈনিক পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম না হলে তা মা ও শিশুর উপর প্রভাব ফেলে। যথাসম্ভব পর্যাপ্ত ঘুমানো চেষ্টা করুন। দিনে দুই ঘণ্টা এবং রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন এই সময়। কোনোভাবেই তা অবহেলা করবেন না। 

 

 

সূত্র: উইমেন্স হেলথ