একটি সিগারেটের বিপরীতে ৩০ সেকেন্ড আয়ু বাড়ে!

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২২, ১২:৪৬ পিএম

ধূমপান মানুষের বদঅভ্যাসের একটি। অনেকের কাছেই এটি ফ্যাশন। এরপর নেশায় পরিণত হয়। নেশার তাড়ায় ধূমপান ছাড়া ঠিকতেই পারেন না। কিছুক্ষণ পরপরই ধূমপান করছেন। নিজের অজান্তেই ধূমপানের প্যাকেট শেষ করছেন। এই বদভ্যাস সাময়িক প্রশান্তি দেয়। কিন্তু দেহের জন্য় তা অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

ধূমপান বা তামাক সেবক মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকারক তা বিভিন্ন গবেষণায় বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে। প্যাকেটের গায়েও সতর্কীকরণ বার্তা লেখা থাকছে। তবুও যেন ধূমপায়ীরা নিজেদের প্রশান্তিকেই প্রাধান্য দিয়ে বারবার ফুঁ দিচ্ছে সিগারেটে। অথচ জানেন কি, একটি সিগারেটের পরিবর্তে আপনার ৩০ সেকেন্ড আয়ু বাড়তে পারে! সুস্থ দেহে বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারবেন আপনি।

সম্প্রতি এক গবেষণায় এই তথ্য প্রমাণিতও হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, সিগারেটের মধ্যে ক্ষতিকারক কিছু পদার্থ থাকে। এর মধ্যে রয়েছে নিকোটিন, বেনজোপাইরিন, অ্যাক্রোলিন, নাইট্রোসামাইনিস নামক খারাপ কিছু পদার্থ রয়েছে। এগুলো ডিএনএ-কে বেধে ফেলতে পারে। যা কোষের অস্বাভাবিক বিকাশের জন্য দায়ী। তাই ধূমপান যত কমবে আয়ু তত বাড়বে। একটি সিগারেট না খেলে ৩০ সেকেন্ড আয়ু বাড়ে মানুষের।

৩১ মে মঙ্গলবার ওয়াল্ড নো টোবাকো ডে অর্থাত্ তামাক বিরোধী দিবস। এই বছর তামাক বিরোধী দিবসের থিম হচ্ছে- ‍‍`পরিবেশ বাঁচাও।‍‍` তামাক সেবনের ক্ষতিকর প্রভাব, মারাত্মক ঝুঁকির বিস্তারিত তুলে ধরার জন্যই দিবসটি পালন করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, তামাক শিল্প পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। পরিবেশের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ বাড়ে। এর ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ কমছে, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপান থেকে মৃত্যু এবং রোগ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ১৯৮৭ সালে প্রথম বিশ্ব তামাক বিরোধী দিবস পালন শুরু করে। মানুষের স্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে, জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য, জনস্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে শিক্ষিত করার জন্য এই দিনে বেশ কয়েকটি কার্যক্রমের আয়োজন করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, তামাক সেবনে প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৮০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। তামাক সেবন শ্বাসনালীতে সংক্রমণ, শ্বাসনালীর অবনতি, হাঁপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের জন্য দায়ী।
ধূমপানের এই অভ্যাস পরোক্ষভাবে অন্যেরও ক্ষতি করে বলে জানায় গবেষণাটি। 

গ্লোবাল হেলথ সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ৪১ হাজার মানুষ প্রতি বছর প্রাণ হারান। নিজেরা ধূমপান না করলেও অন্যদের কারণে তারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এরমধ্যে শিশুদের সংখ্যাও অনেক।

শুধু সিগারেট নয়হুক্কা, গুটখা, সুপারি, জরদা, মদ্যপান সহ সব ধরনের তামাক শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিটি মানুষকে সিগারেট মুখে তোলার আগে নিজের, পরিবার এবং সমাজের সম্পর্কে ভাবা উচিত। তবেই সমাধান সম্ভব।

 

সূত্র: ইডব্লিউএন