আমের মৌসুম চলে এসেছে। পাকা আমের রাজত্ব শুরু হবে কয়েক দিনের মধেই। প্রকৃতির সুস্বাদু এই ফল গাছ থেকে পেড়েই খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া যায়। পানি দিয়ে না ধুয়েই অনেকে গাছ পাকা আম খেয়ে নেন। সেই আম খেতে মজাই ভিন্ন। আমের মৌসুমকে এভাবেই উপভোগ করেন ভোজনপ্রেমীরা।
গ্রামে এই চিত্র বেশি দেখা যায়। শহুরে জীবনে বাজার থেকে কিনে এনে আম খেতে হয়। গ্রামের বাড়ির পাকা আম আনলেও তা বেশি দিন রাখা যায় না। তৃপ্তি ভরে খেতে বাজার থেকে কিনতেই হয়। কিন্তু বাজারের কেনা আম সরাসরি খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। এমনকি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আম খাওয়ার আগে অন্তত ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর পেছনে কারণও রয়েছে।
আম খাওয়ার আগে কেন ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন, এর পেছনের কী কী কারণ থাকতে পারে চলুন তা জেনে নিই এই আয়োজনে।
আম গাছ থেকে পাড়লে খেয়াল করবেন, এর বোঁটার অংশ থেকে আঠালো এক ধরনের কষ বের হচ্ছে। এতে অ্যাসিড থাকে। এই কষ শরীরের কোনো অংশে লাগলে ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। কেনা আমেও বোঁটা ভাঙার পর এই কষ দেখা দেয়। তাই কেনা বা গাছ থেকে পারা যেকোনো আমই পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পরই কষ চলে যাবে।
আম শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। থার্মজেনেনিস প্রসেসের কারণে এই তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাই প্রচণ্ড গরমে আম খেলে পেটের ওপর প্রভাব পড়ে। হজম প্রক্রিয়ায় গণ্ডগোল হতে পারে। কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখলে আম ঠান্ডা হবে এবং শরীরের তাপমাত্রাও তেমন বাড়বে না।
বাজারের কেনা আমে কেমিক্যালের প্রয়োগ থাকে। বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে আমে কেমিক্যাল প্রয়োগ হয়। তাছাড়া আম দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তরতাজা রাখতেও কেমিক্যালের প্রয়োগ করেন ব্যবসায়ীরা। যা শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, আম থেকে ক্ষতিকর কেমিক্যাল সরে যাবে।
আমের খোসায় থাকা ফাইটিক অ্যাসিড স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। এই অ্যাসিড অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্ট হিসাবে পরিচিত, যা শরীরে আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়ামের মতো কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান শোষণে বাধা দেয়। তাই আম ভিজিয়ে রাখলে এই অ্যাসিড দূর হয়।
দ্রুত আম পাকাতে আমের গায়ে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান স্প্রে করা হয়। এগুলো শরীরে গেলে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা হয়। এসব সমস্যা থেকে বাঁচতে আম খাওয়ার আগে ভিজিয়ে রাখুন।
আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। যা শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আম ভিজিয়ে রাখলে ফাইটোকেমিক্যালের ঘনত্ব কমে যাবে। এতে শরীরে ফ্যাটের পরিমাণও কমবে।