সন্তান প্রসব করার মুহূর্তটা কষ্ট ও আনন্দের সংমিশ্রণ হয়। মানসিক আনন্দ থাকলেও একটা চাপ অনুভূত হয়। যা শারীরিক ও মানসিক উভয়দিক থেকেই হতে পারে। এই সময়টাতে নারীর শরীরের মধ্যে বিশাল হরমোনাল পরিবর্তন হয়।
শিশুর জন্মকে ঘিরে মায়ের কিছু অনুভূতি থাকে। জন্মের আগে ও পরে মানসিক অনুভূতিরও বেশ পরিবর্তন হয়। নতুন শিশুটির জন্মের প্রথম কয়েকদিনের মধ্যেই আনন্দ, ক্লান্তি এবং অন্যান্য আবেগের সংমিশ্রণ অনুভব করে মায়েরা।
নিজেদের শরীরের পরিবর্তন এবং শিশুর চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে মায়েদের মানসিক অবস্থারও পরিবর্তন হয়। মেজাজ, আবেগ, খুশি, হাসি- কান্না সবকিছুতেই তখন পরিবর্তন আসে।
হরমোনের পরিবর্তন
প্রসবের পরে নারীদের ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেশ কমে যায়। থাইরয়েডের মাত্রাও নেমে যেতে পারে, যা ক্লান্তি এবং বিষণ্নতার দিকে নিয়ে যায়। দ্রুত হরমোনীয় পরিবর্তনগুলো - রক্তচাপ, রোগ প্রতিরোধের কার্যকারিতা এবং বিপাকের পরিবর্তনের সঙ্গে প্রসবোত্তর বিষণ্নতা সৃষ্টি করতে পারে।
শারিরীক পরিবর্তন
গর্ভবতী নারীদের অসংখ্য শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন আসে। প্রসবের সময় থেকে শারীরিক যন্ত্রণা বা শিশুর ওজন কমার অসুবিধাসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এতে আপনি শারীরিক এবং যৌন আকর্ষণ সম্পর্কে অনিরাপদ হয়ে যাবেন।
স্ট্রেস
নবজাতকের যত্ন নেওয়ার চাপও বেড়ে যেতে পারে। নতুন মায়েরা প্রায়ই ঘুম থেকে বঞ্চিত হন। আপনি আপনার শিশুর সঠিকভাবে যত্ন নিতে গিয়ে উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারেন। এই সমন্বয়গুলো কঠিন হতে পারে। প্রথমবারের মা হলে অবশ্যই আপনাকে সম্পূর্ণ নতুন পরিচয়ে অভ্যস্ত হতে হবে।
পোস্ট-ডেলিভারির পর মায়েরা এমন কিছু আবেগ ও অনুভূতি মধ্যে দিয়েই যান। নতুন মায়েদের মানসিক পরিবর্তনের যে লক্ষণগুলো বেশি দেখা যায়-
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীর মধ্যে পোস্ট ডেলিভারির এমন অনুভূতিগুলো কয়েক দিনের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। কিংবা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই লক্ষণগুলো কমতে শুরু করবে। নতুন শিশুর দেখাশোনায় পুরোপুরি ব্যস্ত হয়ে গেলে নারীরা এমন লক্ষণগুলো কাটিয়ে উঠতে পারেন।
এক্ষেত্রে নারীদেরকে নিজের প্রতি সদয় হওয়ার পরামর্শ দেন মনোবিশেষজ্ঞরা। তাদের পরামর্শ, পোস্ট ডেলিভারির এই অনুভূতিগুলো মাতৃত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য করার একটি স্বাভাবিক অংশ। এই বিষয়টি নারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে। পরিবারের সদস্যরা তাকে এই বিষয়গুলো নিয়ে সাহায্য করতে পারেন।
পোস্ট ডেলিভারির এমন অনুভূতিগুলো কাটিয়ে উঠতে মায়েদেরকে নিজের প্রতিও যত্নশীল হতে হবে। শিশুর ঘুমের সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। মন ভালো করতে মাঝে মাঝে খোলা স্থানে ঘুরে আসুন। মানসিক পরিবর্তনের এই অনুভূতিগুলো চেপে না রেখে সঙ্গীকে জানান।
কিছু ক্ষেত্রে অনুভূতিগুলো খুব কঠিন বা দীর্ঘায়িত হয়। অনেকে শিশুর যত্নের প্রতিও উদাসীন থাকেন। যদি মনে হয়, আপনি আপনার শিশুর ক্ষতি করতে পারেন তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সূত্র: হেল্প গাইড