শিশু জন্মের পর শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে। প্রসবের কিছুদিন পর থেকেই এসব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। নবজাতকের চামড়া বা ত্বক খসে যাওয়া শুরু করে। অভিভাবকরা এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কিন্তু নবজাতকের শরীরের ত্বকের খোসা ওঠা সাধারণ ও স্বাভাবিক ঘটনা বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা জানান, নবজাতক শিশুর ত্বক শুষ্ক বা ফ্লেচি হওয়া শুরু করে। এটি শিশুর শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে খোসার মতো ওঠে। কারণ শিশু মায়ের দেহে প্রচুর তরল দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এবং ভার্নিক্স তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। যা নবজাতকের শরীরকে ঢেকে রাখে। এগুলো শিশুকে তরল থেকে রক্ষা করে। শিশু জন্মের পর এসব তরল শিশুর শরীর থেকে মুছে ফেলা হয়। তবে ভার্নিক্সটি শিশুর শরীরে থেকে যেতে পারে। যা পরে খোসা আকারে উঠে যায়।
নবজাতক সব শিশুর ক্ষেত্রে ত্বক খসে যাওয়ার পরিমাণ এক নয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, সময়ের আগেই জন্মানো শিশুর তুলনায় দেরীতে জন্ম নেওয়া শিশুর ত্বক বেশি খসে। সাধারণত শিশুর হাতের আঙুল এবং পায়ের আঙুল থেকে বেশি পরিমাণ ত্বক খসে।
নবজাতকের ত্বক খসা শুরু হলে যেভাবে পরিচর্যা করবেন এর কিছু উপায় জেনে নিন।
শিশুর ত্বকে ময়শ্চাইজার ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারার নবজাতকের শরীরে দিনে দুইবার লাগিয়ে নিন। শিশুর ত্বককে হালকা ম্যাসাজ করুন। এতে ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে এবং আর্দ্রতাকে ত্বকের গভীরতায় পৌঁছাবে। প্রয়োজনে চিকিত্সকের পরামর্শে উপযুক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
নবজাতকের শরীরকে হাইড্রেট রাখতে হবে। শরীরে পানির স্তর স্থির রাখা প্রয়োজন। বুকের দুধ বা ফর্মুলা-ভিত্তিক দুধ বোতলে খাওয়ানোর রুটিনটি অনুসরণ করুন। সময়মতো শিশুকে খাবার দিন। এতে নবজাতকের ত্বকের আর্দ্রতা আবারও তৈরি করবে।
ছয় মাসের কম বয়সী শিশুকে পানি পান করাবেন না। এতে ক্ষতি হতে পারে। এক্ষেত্রে স্তন্যপান করানোই উত্তম।
নবজাতককে প্রতিদিন গোসল করাবেন। তবে বেশি সময় ধরে গোসল করাবেন না। ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই গোসল সারুন। গোসলের সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। সুগন্ধ হীন হালকা সাবান ব্যবহার করুন। নরম কাপড় ব্যবহার করুন। ত্বক ঘষবেন না। আলতো করে মুছে ফেলুন।
নবজাতকের শরীরে ব্যবহৃত সাবান, লোশন বা ময়েশ্চারিয়ার রাসায়নিক উপাদান মুক্ত রাখবেন। রাসায়নিক উপাদান ত্বকের সমস্যাকে খারাপ করে তুলতে পারে।
নবজাতককে যে ঘরে রাখবেন সেই ঘরে স্বাভাবিক আদ্রতা ঠিক রাখুন।