বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের হাড়ের ক্ষয় দেখা দেয়। সাধারণত শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। আজকাল ব্যস্ত জীবনের কারণে অনেকেই প্যাকেটজাত খাবার খেয়ে থাকেন, যে কারণে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থেকেই যায়।
আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য হাড় ভালো রাখা জরুরি। হাড় আমাদের শরীরকে বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে। তাই হাড়কে সবল রাখতে চাই পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস। দৈনন্দিন জীবনে কিছু ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার যোগ করলে যত্নে থাকবে আমাদের হাড়।
ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় দুধ সবার ওপরে। সহজে হজমযোগ্য এবং শোষণযোগ্য দুধ সেরা উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারগুলোর মধ্যে একটি। শৈশব থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত হাড় তৈরির একটি আশ্চর্যজনক বাহন এটি। এক কাপ দুধে প্রস্তাবিত ১০০০ মিলিগ্রামের ২৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে।
কমলা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই জাদুকরী ফলে ভিটামিন সি-সহ উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের তালিকায়ও রয়েছে, যা শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি মাঝারি আকারের কমলায় ৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের তালিকাভুক্ত সার্ডিন একটি সুস্বাদু সামুদ্রিক মাছ। আপনি যদি একজন আমিষভোজী হন তবে এটি আপনার প্রয়োজন। এই ছোট নোনতা মাছ পাস্তা এবং সালাদে বাড়তি স্বাদ যোগ করতে পারে।
এটি একটি মিথ যে শুধু দুগ্ধজাত দ্রব্যে ক্যালসিয়াম থাকে। অ-দুগ্ধজাত পণ্য যেমন ফোর্টিফাইড সয়া দুধ আশ্চর্যজনক উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার হতে পারে এবং ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি উভয়ই সরবরাহ করে, যা হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে।
বাদাম উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। উচ্চ প্রোটিন সরবরাহের পাশাপাশি বাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়া বাদাম আপনার স্মৃতিশক্তি উন্নত করার জন্য একটি দুর্দান্ত উৎস। প্রতিদিন সকালে এই প্রোটিনসমৃদ্ধ বাদাম আপনার হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের উৎস হওয়ায় সয়াবিন হলো হাড়-বান্ধব খাবার। কলম্বিয়ার মিসৌরি ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, সয়া-ভিত্তিক পণ্য খাওয়া পোস্টম্যানোপজাল নারীদের মধ্যে হাড়কে মজবুত করতে পারে।
দই একটি দুগ্ধজাত পণ্য, যাতে আমাদের অন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এক বাটি দইয়ে ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। পাশাপাশি এটি প্রোটিনেরও ভালো উৎস। এটি দুধের বিকল্প হিসেবেও খাওয়া যায়।
উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজিতে ক্যালসিয়ামও থাকে পর্যাপ্ত। পালংশাক, সেলারি এবং ব্রকলির মতো বেশ কয়েকটি শাকসবজিতে ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে। সবুজ শাকসবজিতে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামও রয়েছে, যা হাড়কে সবল রাখতে সাহায্য করে।