লোম শরীরের অংশ। শরীরের প্রায় সব স্থানেই কমবেশি লোম থাকে। ছেলেমেয়ে উভয়েই শরীরে ও মুখে লোম গজায়। তবে উভয়ের শারীরিক গঠন অনুসারে এই লোমে পার্থক্য রয়েছে। ছেলেদের শরীরের লোম মোটা ও বড় হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে তা উল্টো। মেয়েদের শরীরে লোম হালকা এবং তুলনামূলক পাতলা হয়। কিন্তু বিপত্তি তখনই হয়, যখন মেয়েদের লোম অস্বাভাবিকভাবে বড় ও মোটা হতে শুরু করে।
লোমের রং কালো হলে তা বেশি দৃশ্যমান হয়। বাদামি রঙের লোম অপেক্ষাকৃত কম দেখা যায়। মেয়েদের মুখে কালো রঙের লোম বেড়ে গেলেই একে বলা হয় ফেসিয়াল হেয়ার বা মুখের অবাঞ্ছিত লোম।
ফেসিয়াল হেয়ার বা মুখের অবাঞ্ছিত লোমকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় হারসুটিজম বলে। এটি মেয়েদের মুখে, ঠোঁটের ওপরে এবং চোয়ালের বাড়তি লোমকে বোঝায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, শরীরে হরমোন পরিবর্তনসহ বেশ কয়েকটি কারণে লোম বেড়ে যায়। শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বেশি হলে অবাঞ্ছিত লোম দেখা যায়। এই হরমোন মূলত পুরুষদের শরীরে থাকে। মেয়েদের শরীরে এর পরিমাণ সামান্য। কিন্তু বিভিন্ন রোগের কারণে মেয়েদের মধ্যে এই হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তখনই শরীরের অবাঞ্ছিত লোম দেখা দেয়। সাধারণত মেয়েদের ওভারিতে সিস্ট, টিউমার বা ক্যানসার হলে এমন লোমের পরিমাণ বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় ও মেনোপজ হলে মেয়েদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তন হয়। এই অবস্থায় অস্বাভাবিকভাবে মুখে ও শরীরে অবাঞ্ছিত লোম দেখা দেয়।
এছাড়া কিডনির ওপরে থাকা অ্যাড্রেনালিন গ্রন্থিতে কোনো রোগ থাকলেও অবাঞ্ছিত লোম দেখা যায়।
অনেক সময় জেনেটিক কারণেও মুখে অবাঞ্ছিত লোম গজায়। চিকিৎসার জন্য় ব্যবহৃত ওষুধ ও ট্রিটমেন্টের কারণেও মুখের অবাঞ্ছিত লোম দেখা যেতে পারে। যেমন চুল গজানোর ওষুধ (মিনোক্সিডিল, রোজেইন), হরমোন ট্রান্সপ্ল্যান্ট, অরগান ট্রান্সপ্ল্যান্ট, টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি পূরণ করার ওষুধ (অ্যান্ড্রোজেল, টেস্টিম)।
নারীদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন নামক পুরুষ হরমোন বেড়ে গেলে অবাঞ্ছিত লোম বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ওজন ও অ্যান্ড্রোজেন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় এমন ওষুধ অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধিতে দায়ী।