‘সালমান শাহ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪’ মনোনয়ন পেলেন যারা

মো. বাবুল প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
‘সালমান শাহ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪’-এর মনোনিত শিল্পী। ছবি: সংবাদ প্রকাশ

প্রতি বছরের মতো এ বছরও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘সালমান শাহ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪’। অমর নায়ক সালমান শাহর জন্মদিন ১৯ সেপ্টেম্বর। দিনটি উপলক্ষে মহা আয়োজনে প্রিয় এই নায়কের জন্মোৎসব পালন করবে ‘সালমান শাহ স্মৃতি পরিষদ’।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এফডিসি চত্বরে  উদযাপন হবে অনুষ্ঠানটি। এই দিনে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ৫জন শিল্পীকে দেওয়া হবে ‘সালমান শাহ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪’। সম্মানিত দর্শক ও জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তে প্রাথমিক ভাবে অভিনয় ও গানে ১০ জনকে মনোনিত করেছে পরিষদ।

মনোনিত শিল্পীরা হলেন- শাবনূর, জয়া আহসান, মেহজাবীন চৌধুরী, পরীমনি, আজমেরী হক বাঁধন, বিদ্যা সিনহা সাহা মিম, মাহিয়া মাহি, পূজা চেরি ও তাসনিয়া ফারিণ। এছাড়া সংগীতে মনোনয়ন পেয়েছেন- জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা, নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি ও দিলশাদ নাহার কনা।

‘সালমান শাহ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪’ মনোনয়ন নিয়ে পরিষদের সভাপতি এস এম শফি  বলেন, ‘অমর নায়ক সালমান স্মরণে আমরা  নায়কের জন্মোৎসব পালন করব এফিডিসিতে। এ বছর আমরা শিল্পীসমিতির সহযোগিতা নিয়ে এই আয়োজন সফল করতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ‘সালমান শাহ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৪’ নারী শিল্পীর মনোনয়নের প্রাথমিক বাছাই চুড়ান্ত করেছে। তালিকায় যাদের নাম রয়েছে আমি মনেকরি যোগ্যতার ভিক্তিকে রয়েছে। সালমান শাহকে মনে রাখতেই এই মহতি আয়োজন।’

১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সালমান শাহ। বাবার নাম কমরউদ্দিন চৌধুরী। মায়ের নাম নীলা চৌধুরী। পরিবারের বড় ছেলে সালমানের আসল নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বেঁচে ধাকলে ১৯ সেপ্টেম্বর ৫৩ বছরে পার রাখতো জনপ্রিয় এই নায়ক।

অমর নায়ক সালমান শাহর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর)। ১৯৯৬ সালের এই দিনে রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় তিনি মারা যান।

সালমান শাহ ছিলেন একাধারে অভিনেতা ও মডেল। তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম প্রতিভাবান, জনপ্রিয়, সফল এবং কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার প্রকৃত নাম ছিল চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন। গণমাধ্যমে তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের রাজপুত্র, নায়কদের নায়ক, আধুনিক ঢালিউডের প্রথম সুপারস্টার, অমর মহানায়ক এবং স্বপ্নের নায়ক উপাধিতে ব্যক্ত করা হয়।

টেলিভিশন নাটক দিয়ে তার অভিনয়জীবন শুরু হলেও ১৯৯০-এর দশকে তিনি চলচ্চিত্রে অন্যতম জননন্দিত শিল্পী হয়ে ওঠেন। ১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত মুক্তি পায়। একই ছবিতে নায়িকা মৌসুমী ও গায়ক আগুনের অভিষেক হয়। সাড়ে তিন বছরের মতো স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার অধিকাংশই ছিল ব্যবসাসফল।

জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ নব্বইয়ের দশকের বাংলাদেশে সারা জাগানো অনেক চলচ্চিত্র যেমন—‘ বিক্ষোভ’, ‘সুজন সখি’, ‘কন্যাদান’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ইত্যাদিতে অভিনয় করার মাধ্যমে দেশের শীর্ষ তারকায় পরিণত হন।

সালমান শাহ পারিবারিক গল্প, কমেডি, সামাজিক ও রাজনৈতিক গল্প, অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্র, গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত গল্প, আসন্ন যুগের গল্প, রোমান্স এবং ট্র্যাজেডির মতো বিভিন্ন ঘরানার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

তাকে একাধারে প্রভৃতি প্রকৃতির চলচ্চিত্রে দেখা যেত যেখানে সালমান শাহ নিজের বহুমুখী অভিনয় প্রতিভা, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন ধরনের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে নিজের সক্ষমতার পরিচয় দেন। ফলস্বরূপ ব্যবসায়িক সাফল্য ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেন এবং ঢালিউডে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতায় পরিণত হন।

তার তিনটি চলচ্চিত্র ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ ও ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ঢালিউড বক্স অফিসে সর্বকালের শীর্ষ দশটি সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে।

সালমান শাহ সর্বস্তরের জনগণের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ও ফ্যাশন সেন্সের জন্য বিখ্যাত হন। গণমাধ্যমে তাকে বাংলাদেশের সেরা ফ্যাশন আইকন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা অর্থপূর্ণ সিনেমার একটি নতুন ব্র্যান্ড প্রবর্তন এবং আধুনিক যুগের নায়কদের অনুপ্রাণিত করার জন্য সালমান এবং তার শৈল্পিকতা ও ফ্যাশনকে কৃতিত্ব দেন।