বিটিএস কোরিয়ান পপ ব্যান্ডের এই নামটি শোনেনি এমন মানুষ খুবই কম। ৭ সদস্য বিশিষ্ট ব্যান্ড দলটির পুরো নাম ‘বাংতাং সোনিয়ন্দন’ যার অর্থ বুলেটপ্রুফ বয়েজ স্কাউট। প্রচলিত ধ্যান-ধারনার বিপরীতে তাদের শক্ত অবস্থানের জন্যই এমন নাম। বিশ্বের নামকরা শিল্পীদের থাকে বিশালসংখ্যক ফ্যানবেইজ। তেমনি আছে কোরিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ডদল বিটিএসের।
বিটিএস বা যারা বাংতাং বয়েজ নামে পরিচিত তারা দক্ষিণ কোরিয়ার বয় ব্যান্ড। এই সাত সদস্যের ব্যান্ড ‘বিগ হিট’ মিউজিকের অধিনে ২০১০ সানে ট্রেনি হিসেবে এবং ২০১৩ ‘টু কুল ফোর স্কুল’ অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে।
নিজেদের আত্মপ্রকাশের পর ২০১৪ সালে প্রকাশ করে তাদের প্রথম কোরিয়ান স্টুডিও অ্যালবাম ‘ডার্ক এন্ড ওয়াইল্ড’ এবং জাপানিজ স্টুডিও অ্যালবাম ‘ওয়েকআপ’। দুই বছর পর ২০১৬তে আসে তাদের দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম ‘উয়িংস’। যার এক মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে কোরিয়াতে। এরপর ২০১৭ সালে পুরো বিশ্বের সংগীত জগতে নিজেদের স্থান করে নেয় বিটিএস।
২০১৭ সালেই ‘বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘টপ সোশ্যাল আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার পর থেকে তাদের নিয়ে সমালোচনা বেড়ে যায়। একদিকে ‘বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়া প্রথম কোরিয়ান ব্যান্ড হিসেবে অন্যদিকে পশ্চিমাদের ভেতরে বিশাল একটি অংশ বিটিএস আর্মি তৈরি হয়। সবমিলিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে বিটিএস।
ভক্তদের কারণেই বিটিএসের সম্পদ বেড়েছে হু হু করে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২১ মিলিয়ন অ্যালবাম কপি বিক্রি করা দলের নাম বিটিএস। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে বিশ্বে সর্বোচ্চ অ্যালবাম বিক্রি করা তালিকায় তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। কোরিয়ার অর্থনীতিতে বিটিএসের অবদান প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার। বিশালসংখ্যক অবদান রাখার কারণে বিটিএস ফ্যানবেইজকে বলা হয় বিটিএস ‘আর্মি’।
মূলত হিপহপ সংগীতের গ্রুপ হলেও তাদের গানগুলোতে বিভিন্ন সংগীতের ধরণ প্রকাশ পায়। গানের মধ্য দিয়ে তারা সাহিত্য- মনস্তাত্বিক বিষয় এবং নিজেকে ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে দর্শকের কাছে। বাংলাদেশেও বিটিএস ব্যান্ডের আছে বিশাল ফ্যানবেইজ। সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুকে সোচ্চার থাকে এই ব্যান্ডের ফ্যানরা। বিটিএসের ফ্যানরা নিজেদের বিটিএস আর্মি বলে দাবি করে।
বিটিএসের ভক্ত যেমন আছে তেমনি আছে অসংখ্য হেটার্স। অনেকেই মনে করেন কোরিয়ান ব্যান্ডটিকে পছন্দ না করার বড় কারণ তাদের পোশাক-আশাক বা চেহারা। কোরিয়ান ব্যান্ড সদস্যদের সাজগোজ করার ব্যাপারটাও নেতিবাচকভাবে দেখেন কেউ কেউ। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিটিএস আর্মিদের সঙ্গে এর সমালোচকদের দ্বন্দ্বও বেশ প্রকাশ্য।