সংকট কাটিয়ে ওঠার বছর চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টদের

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২১, ০৩:৪৪ পিএম

পূর্বাপর
অপ্রাপ্তির কোটি দীর্ঘশ্বাস সঙ্গী করে বিদায় নিচ্ছে ২০২১ সাল। যেন বিষাদে ঘেরা একটা বছর। করোনার চোখ রাঙানি থমকে দিয়েছিল গোটা পৃথিবীর গতিপথ। আর সে কারণে ২০২০ সাল ঢালিউডের জন্য সুখকর ছিল না। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টদের ধারণা ছিল, ২০২১ সালে করোনার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াবে ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু না, অদৃশ্য এই জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে এ বছরও। তবে সিনেমা বাঁচাতে অনেক পরিচালক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করেছেন।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির তথ্যমতে, ২০২০ সালে মাত্র ১৭টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সেই তুলনায় এবারের সংখ্যাটা বেশ ভালো। বছরের শেষ দিন (৩১ ডিসেম্বর) ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ ও ‘রাত জাগা ফুল’ সিনেমা দুটি মুক্তি পেলে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০। এ ছাড়া সাফটা চুক্তির আওতায় মুক্তি পেয়েছে ‘বাজী’ ও ‘গোলন্দাজ।  
২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল ৫৬টি সিনেমা। ২০১৯ সালে সেই সংখ্যা ৪৫-এ নেমে আসে। অতীত হিসাব বলে, আগে দেশের সিনেমা হলে এক শর কাছাকাছি সিনেমা মুক্তি পেত। এখন সেখানে হাতে গোনা কয়েকটিতে এসে পৌঁছেছে।

বছরের শুরু মানহীন ছবি দিয়ে, শেষটা ভালো
‘কেন সন্ত্রাসী’ সিনেমা দিয়ে শুরু হওয়া বছর শেষ হয় ‘রাত জাগা ফুল’ ও ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ সিনেমার মাধ্যমে। খারাপ হলেও শেষটা ভালো। মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর মধ্যে ভালোমন্দের সংমিশ্রণ ছিল। মানহীন সিনেমাগুলো যেমন সমালোচিত হয়েছে, তেমনি মানসম্পন্ন সিনেমাগুলো প্রশংসিত হয়েছে। তবে ব্যবসায়িকভাবে কোনো সিনেমাই সেভাবে লাভবান হতে পারেনি।

উল্লেখযোগ্য সিনেমা
মানের বিচারে ‘অলাতচক্র’, ‘স্ফুলিঙ্গ’, ‘পদ্মাপুরাণ’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, নোনা জলের কাব্য’, ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, ‘কালবেলা’, ‘মৃধা বনাম মৃধা’, ‘রাত জাগা ফুল’ ও ‘চিরঞ্জীব মুজিব’। 
এই সব ছবির মধ্যে সব থেকে বেশি আলোচনায় ছিল ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমাটি। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত সিনেমাটি ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে আঁ সার্তে রিগা বিভাগে অফিশিয়ালভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছিল। তবে ঝুলিতে কোনো পুরস্কার না এলেও সেখানে প্রদর্শনের পর প্রশংসিত হয় সিনেমাটি। 
‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি নিয়েও বেশ আলোচনা হয়েছিল। দেশের পাশাপাশি বিদেশের কিছু সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। প্রচারণাও সেভাবে চালানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়িকভাবে প্রত্যাশিত ফলাফল পায়নি। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্দের ভালো বলা যায়।

আলোচিত তিন সিনেমা
ব্যবসায়িক দিক বিবেচনায় কোনো ছবিকে সেরার তালিকায় রাখা সম্ভব নয়। বলতে গেলে বছরের সব ছবি দর্শকশূন্যতায় ভুগেছে। তবে এর মধ্যেও কিছু ছবি আলোচনায় উঠে এসেছে। সে হিসেবে বছরের সেরা তিন সিনেমা হলো ‘স্ফুলিঙ্গ’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ও ‘মিশন এক্সট্রিম’।

আরও মানসম্মত বড় বাজেটের ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল চলতি বছরে। ভাবা হচ্ছিল, সেসব সিনেমা কাঁধে ভর করে এগিয়ে যাবে বাংলা চলচ্চিত্র। কিন্তু তা আর হয়নি। করোনায় পিছিয়েছে সেসব ছবির মুক্তি। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আসছে বছর আবার ঘুরে দাঁড়াবে দেশের চলচ্চিত্র।