বসন্তে রঙিন রাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৪, ০৫:০৮ পিএম
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

রুক্ষ, শুষ্ক ও বিষণ্ণ প্রকৃতির বুকে শীতের শেষে প্রাণের সঞ্চার নিয়ে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। কোকিলের কুহু কুহু ডাক নিষ্প্রাণ প্রকৃতির বুকে যেন বসন্তের আগমনী বার্তা। কোকিলকে তাই হয়তো বলা হয় বসন্তের দূত। ফাগুনের উষ্ণ হাওয়ায় কোকিলের ডাক বিরহের বেদনাগুলোকে আরও মধুর করে তোলে।

কাপ্তাই লেক ও পাহাড়ের ঘন সবুজের বুকে কোলাহলমুক্ত ৬৪ একরের ক্যাম্পাস রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) বসন্তে ফিরে পায় তাঁর চিরায়ত লাবণ্যময়ী রূপ। শীতের রুক্ষ ও শুষ্কতা কাটিয়ে বসন্তের আগমনে ক্যাম্পাসে বইছে স্নিগ্ধ হাওয়া। পাতা ঝরা গাছের ডালে উঁকি দিচ্ছে নতুন পাতা। চারিদিকে মুখরিত হয়ে উঠেছে নানান রঙের ফুল, মৌমাছি ও প্রজাপতির মেলায়। কোকিলের মধুর কণ্ঠের সুরে মাতিয়ে রাখে কেন্দ্রীয় মাঠে যাওয়ার রাস্তা। রাস্তার দুপাশের আমগাছের আমের মুকুলে ভ্রমরের গুঞ্জন, ফলের গাছে বিভিন্ন পতঙ্গের আনাগোনা, আশেপাশের অল্পস্বল্প কাশফুল আর মেঘলা রোদ্দুরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় সকলের মনকে করে তোলে প্রাণোচ্ছ্বল।

ক্যাফেটেরিয়ার পাশে মাচায় বসে শিক্ষার্থীদের গানের আড্ডা মুখরিত করে রাখে ক্যাম্পাস। ক্যাফেটেরিয়ার মাচায় বসে গান উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসের জনপ্রিয় সিঙ্গেল ব্রিজ ও আকাশের সৌন্দর্য মনে এনে দেয় সতেজতা। সিঙ্গেল ব্রিজের সৌন্দর্য একেক ঋতুতে একেক রকম। কাপ্তাই লেকের পানি বাড়া কমার সঙ্গে এই সৌন্দর্যের সম্পর্ক। সিঙ্গেল ব্রিজ কখনো পানির নিচে, কখনো পানিতে ডুবুডুবু, আবার কখনো পানিহীন। বর্ষার পরপরই পুরোটা পানির নিচে চলে যায়। আবার শীতের শুরু থেকে যখন পানি কমতে থাকে বসন্ত আসার সাথে সাথেই এক অন্য রূপ ধারণ করে। তখন বিকেলে শিক্ষার্থীদের পাদচারণায় মুখতির হয়ে উঠে সিঙ্গেল ব্রিজ।

ক্যাম্পাস জুড়ে গাঁদা, বাগানবিলাস, শিউলি, কাঠমালতি, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়াসহ নানান রঙের ফুলের দেখা মিলে। হলুদ-লাল-কমলা-বেগুনি রঙের ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রবিন্দু বঙ্গবন্ধু চত্বরের পাদদেশ ভরে উঠেছে নানান ফুলের সমারোহে। দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপনায় ফুলের সমারোহ দেখে প্রকৃতিপ্রেমীদের যেন চোখ ফেরানো দায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের উদ্যোগে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ। ক্যাম্পাসের এই সৌন্দর্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ছাড়াও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, “জলবায়ুগত কারণে এখন আর সব ঋতুর দেখা মেলে না। তবে এখনও রঙিন প্রকৃতি আমাদের জানান দেয় বসন্তের। আর এসময় রাবিপ্রবির প্রকৃতি সেজেছে আপন মহিমায়, বেড়েছে প্রাণচাঞ্চল্য।”