ঢাবির জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত

আরিফ জাওয়াদ, ঢাবি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩, ০২:৩৬ পিএম

দুবছর করোনার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে সীমিত পরিসরে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার সেই বিরতি কাটিয়ে পুরোনো আমেজে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাবির জগন্নাথ হলের সরস্বতী পূজা।

জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে প্রধান পূজার পাশাপাশি এবার মোট ৭৩টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হয়েছে। হলের মাঠজুড়ে ৭১টি বিভাগ নির্মাণ করে মণ্ডপ। হলের পুকুরে প্রতিবারের মতো চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রতিমা ছিল। চারুকলা বিভাগের তৈরি প্রতিমার উচ্চতা ৩২ ফুট।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টায় প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর সকালে দেবীকে দুধ, মধু, দই, ঘি, কর্পূর, চন্দন দিয়ে স্নান করানো হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় থেকে শুরু হয় বাণী বন্দনা এবং ৮টা ১০ মিনিটে পুষ্পাঞ্জলি। সবশেষ সাড়ে ১১টায় প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে পূজার কাজ শেষ হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীর পাশাপাশি রাজধানী বিভিন্ন এলাকা থেকে সরস্বতী ভক্তরা এসেছেন। সঙ্গে পরিবারের ছোট্ট সদস্যটিও বাবা-মার হাত ধরে দেবী দর্শনে এসেছেন। কেউ কেউ চোখ বন্ধ করে দুহাত তুলে প্রার্থনা করছেন।

রামপুরা থেকে রীতা চক্রবর্তী এসেছেন তার দুই সন্তান রুপম চক্রবর্তী ও রনিত চক্রবর্তীকে নিয়ে। রীতা বলেন, “আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। প্রায়ই পূজাতে আসা হতো, সেই ২০২০ সালে এসেছিলাম। করোনার পর দীর্ঘ ২ বছর পর আবার সেই পূজা, বেশ ভাল লাগছে। আগে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে উপভোগ করতাম, এখন করছি সন্তানদের সঙ্গে।”

অল্পনা রানী সরকার নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, গেল দু’বছর সেভাবে জাঁক-জমকভাবে পূজাতে অনুষ্ঠিত হয়নি। এবার সেই ২০২০ সালের আমেজ যেন ফিরে এসেছে।

এদিকে লক্ষ্মীবাজার থেকে এসেছেন তপন পাল। সঙ্গে স্ত্রী মীরা বালা ও সন্তান শুদ্ধ। তপন পাল জানান, জগন্নাথ হলের পূজার মধ্যে একটা অন্য রকম বিষয় থাকে। পরিবারসহ ছোট-বড় দেবী দর্শন যেন এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করা। তাই পরিবার নিয়ে পূজা দেখতে আসা।

জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, করোনার পর এবারই প্রথম উৎসাহ-উদ্দীপনা ও পুরোনো আমেজে জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা পালন করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতায় আশা করি একটা সুন্দর পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

জগন্নাথ হলের পাশাপাশি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল এবং কবি সুফিয়া কামাল হলেও পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সরস্বতী বিদ্যা, জ্ঞান ও সুরের দেবী। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে সরস্বতী পূজা। বিদ্যা দেবীর আরাধনার মাধ্যমে অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিনাশ হবে এবং মানুষের মাঝে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে।