কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি (ইলিয়াস-মাজেদ) বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানা যায়।
এ ছাড়া নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের আগামী ১০ কার্যদিবসের মাঝে জীবনবৃত্তান্ত পাঠানোর জন্য বলা হয়।
ছাত্রলীগ মনোনীত কুবি শাখার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপগণশিক্ষা সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম নাহিদ ও উপসাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক ফাহিম ইসলাম লিমন কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পাওয়া যায়।
এদিকে ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিলুপ্তির এ বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করা হলেও পরবর্তীতে এটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
কমিটি বিলুপ্তির ব্যাপারে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপসাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক ফাহিম ইসলাম লিমন বলেন, “কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ থেকে কমিটি বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নোটিশটি সত্য। এখানে কোনো ভুল নেই।”
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন ভিন্ন কথা। তিনি কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে বিজ্ঞপ্তিটি চুয়েটের এবং ভুল করে কুবির নাম এসেছে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপর কুবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পরেও বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস বলেন, “বিজ্ঞপ্তিতে চুয়েটের নাম লিখতে গিয়ে ভুল করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরটাও খুব রিসেন্ট দেওয়া হবে। সম্মেলন বা যাই দিবে সেটা পরবর্তীতে তারা ছাত্রলীগের পেজ থেকে জানিয়ে দেওয়া দিবে।”
তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপসাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক ফাহিম ইসলাম লিমন বলেন, “কুবির সাবেক সভাপতি (ইলিয়াস) বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিয়েছে। চুয়েটের সঙ্গে কুবির কমিটি মিলাচ্ছেন। কিন্তু চুয়েটের সেটাতে আমরা ৩ জন নাই। কুবিরটা আলাদা।”
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত কুবি শাখার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কর্মসূচী ও পরিকল্পনা সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, “এখন পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এটিই লিগ্যাল, কমিটি বিলুপ্ত। যদি পরবর্তীতে কোনো সিদ্ধান্ত আসে তাহলে আমরা জানাব। এখন পর্যন্ত এটিই ঠিক।”
তিনি আরও বলেন, “চুয়েটের জায়গায় কুবি আসছে এটি হাস্যকর। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন নেতার নাম কন্ট্রাক্ট নাম্বার সবই কি ভুল ছিল? এগুলো তো হাস্যকর। এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় থেকে এটিই সিদ্ধান্ত এসেছে যে কমিটি বিলুপ্ত।”
এই বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী কেন্দ্রীয় নেতাদের মাঝে দ্বিমত দেখা যাচ্ছে। সভাপতি ও সম্পাদকের স্বাক্ষরে কমিটি বিলুপ্ত হলেও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারীরা এটি সত্য নয় দাবি করছে। আবার সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারীরা বলছেন বিলুপ্তির এ তথ্য সঠিক।
কুবি শাখা ছাত্রলীগের এই কমিটিকে ২০১৭ সালের ২৬ মে এক বছরের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন।