তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রলীগের সিনিয়র ও জুনিয়র কর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদ ভবন চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ১৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট রাতে লুঙ্গি পরে জিয়া মোড়ে আসেন ল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হুজ্জাত্ল্লুাহ। এ সময় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রিংকু তাকে লুঙ্গি পরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে বাগবিতণ্ডায় জড়ায় তারা। হুজ্জাতুল্লাহর অভিযোগ একপর্যায়ে রিংকু তাকে থাপ্পড় মারেন। গত বুধবার প্রায় রাত দেড়টায় জিয়াউর রহমান হলের প্রধান ফটকের সামনে লাইট অফ করে রিংকুকে মারধর করেন হুজ্জাতুল্লাহ এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিনসহ তার বন্ধুরা।
এ ঘটনার জেরে জুমার নামাজের পরে অনুষদ ভবনে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন, মার্কেটিং বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার তাসওয়ারসহ তার বন্ধুদের মারধর করেন রিংকু ও তার বন্ধুরা। এ সময় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের হামজা নূর, লোকপ্রশাসন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী জামিল এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তোহাসহ রিঙ্কুর বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ আল-আমিনের। পরে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মজুমদারসহ নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের কর্মী শাহজালাল সোহাগ ও রায়হানের অনুসারী বলে জানা গেছে।
পরে রিঙ্কুর বন্ধু আশিক জিয়াউর রহমান হলে খেতে গেলে আল-আমিনের বন্ধু হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২য় বর্ষের শুভ্র ভৌমিক, অর্ক ও আইন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের সুমন লাঠি দিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ আশিকের। আশিককে মারধরের ঘটনা জানার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে তার বন্ধুরা লাঠি, স্টাম্প, রড নিয়ে বের হন। অন্যদিকে জিয়াউর রহমান হলেও আল আমিনের বন্ধু ও সিনিয়ররাও রড, লাঠি ও হোকস্টিক নিয়ে মহড়া দিতে থাকেন। পরে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতসহ সিনিয়র কর্মীরা দুই পক্ষকে শান্ত করেন।
এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, “পূর্বঘটনার জের ধরে সিনিয়র ও জুনিয়রদের মধ্যে এ মারামারি ঘটেছে। আমি চাই মুল অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “অনুষদ ভবন চত্বরে যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে আমি একজনের মাধ্যমে শুনেছি। নামাজ শেষে সেখানে গেলে দায়িত্ব পালনরত আনসার বলেন, ‘এখানে একটা জটলা হয়েছিল, সবাই হলের দিকে চলে গেছে।’ এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।”