মাদকসেবীদের আখড়া বশেমুরবিপ্রবির ক্যাফেটেরিয়া

মেজবা রহমান প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২২, ১২:১৭ পিএম

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বন্ধ ক্যাফেটেরিয়া ভবন সংলগ্ন এলাকা মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত  হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খাবার সরবরাহের জন্য ক্যাফেটেরিয়াটি নির্মাণ করা হলেও প্রতিষ্ঠার আট বছরেও মেলেনি তার সুরাহা।

গত বছরের করোনাকালিন ছুটি শেষে ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকে বহিরাগত বখাটে এবং ক্যাম্পাসের কিছুসংখ্যক মাদকসেবী মাদক সেবনের জন্য এই স্থানকে ব্যবহার করে আসছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাফেটেরিয়া ভবনের সামনে বিভিন্ন বয়সী মাদকসেবীদের আনাগোনা।

এদিকে, ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ভবন নির্মাণ করা হলেও শুরু হয়নি তার কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট থাকায় দোতালা এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসিক হল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরে ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ছাত্রীদের নতুন আবাসিক হলে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে ভবনটি। পরবর্তীতে ভবনের দ্বিতীয় তলায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যালয় করা হলেও রাতের বেলা কার্যালয়টি বন্ধ থাকায় জায়গাটি জনশূন্য  থাকে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “হলে যাওয়ার সময় প্রায়ই এখান থেকে মাদকাসক্ত লোকদের বের হতে দেখি। তারা উল্টাপাল্টা গান গাইতে গাইতে বের হয়। মাঝে মাঝে মেয়েদের হলের সংলগ্ন রাস্তায় গিয়েও অনেকে চিল্লাফাল্লা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান মাদকসেবীদের আখড়া হওয়াটা যেমন দুঃখজনক, তেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের জন্যও অনিরাপদ।”

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নেশার ঘোরে থাকলে কখনোই সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন মানুষ থাকে না। বিকৃত মস্তিষ্কের এই মানুষগুলো কোনো একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সকল কার্যক্রমে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বদা সজাগ। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।”

ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. শরাফত আলী বলেন, “মাদকদ্রব্য গ্রহণের বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। তবে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা দরকার। কে বা কারা এগুলো করছে, তা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”