সিলেটে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢল নামায় আবারও সুরমা নদীর পানি উপচে পড়েছে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। এতে নগরজুড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যার। এবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসে ঢুকে গেছে বন্যার পানি। এতে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবনসহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় পানি প্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকাল থেকে ধীরে ধীরে পানি বাড়তে থাকে। আজ (১৭ জুন) সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি থামার কোনো আভাস নেই। যত সময় যাচ্ছে পানি বাড়তেই আছে। রাতে অনেক জায়গায় হাঁটুপানি থাকলেও এখন তা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে গাড়ি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাইরে বের হতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে ক্যাম্পাসে পানি বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে আছেন শিক্ষার্থীরা। যে হারে পানি বাড়ছে, এভাবে বাড়লে হলের নিচে পানি ওঠে যাবে। চারদিকে লতাপাতা ও ঝোপঝাড় থাকায় সাপ-বিচ্ছুর ভয়েও আছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে গত ১৪ মে থেকে সিলেটে পানি বাড়তে শুরু করে। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও গত কয় দিন যাবৎ টানা বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় আবারও সিলেটে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় পানি ঢুকে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি না ঘটায় এবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকেছে বন্যার পানি।
ক্যাম্পাসে পানি ঢুকে যাওয়া শঙ্কা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, “বন্যার পানি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করায় খুবই শঙ্কিত। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে বাইরে যেতে হলে পানিতে ভিজতে হয়। এছাড়া টানা বৃষ্টিপাতের ফলে বাইরে বের হতে মন চায় না। এভাবে পানি বাড়লে আমরা যারা হলে থাকি তাদের, নানা সমস্যায় পড়তে হবে।”
বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “ক্যাম্পাসে পানি ঢুকে যাওয়ায় আমরা সবাই শঙ্কিত। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা আজ সবাই বসে এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেব। তবে পানি বাড়ার ফলে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য তাদের হলের নিচতলা ছেড়ে ওপরের তলায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”