নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে কারা আসছেন? এ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় ও ত্যাগী নাকি হঠাৎ রাজনীতিতে আসা কারও হাতে উঠবে শীর্ষ দুই পদ। নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করতে কেন্দ্রে তদবির করছেন প্রার্থীরা।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা যায়, শিগগিরই এই ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হবে। কমিটিতে অবশ্যই মেধাবী, যোগ্য ও সৎ দুই জনকে নেতৃত্বে আনা হবে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর শফিকুল ইসলাম রবিনকে সভাপতি ও সাকিব মোশাররফ ধ্রুবকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এক বছর মেয়াদি সেই কমিটিকে প্রায় সাড়ে চার বছর পর গত বছরের ২২ নভেম্বর বিলুপ্ত করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই সঙ্গে শীর্ষ পদ প্রত্যাশীদের সিভি আহ্বান করা হয়। গত ৪ ডিসেম্বর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের সিভি সংগ্রহ করে এই ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। দুই পদের জন্য ৪১২ নেতা-কর্মী তাদের সিভি জমা দেন।
সিভির সংখ্যা চারশতকের ঘরে পৌছালেও নোবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে আসার লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন পাঁচ নেতা। নতুন কমিটিতে নিজের জায়গা শক্ত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক থেকে শুরু করে সাবেক নেতা, প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা, এমপি ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের কাছেও যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা।
ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটের শীর্ষ পদপ্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিনিউকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম রহমান, ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল ইসলাম নুহাশ,পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান শুভ, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাঈম এবং বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান জিসান।
শীর্ষ পদপ্রার্থী নাঈম রহমান বলেন, “আমি চাই সৎ, শিক্ষার্থীবান্ধব, মাদকমুক্ত, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে এমন কেউ নেতৃত্বে আসুক। নেতৃত্বে এলে আমি সুস্থ, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল ক্যাম্পাস উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সবসময় তাদের কল্যাণে কাজ করে যাব। এই ইউনিটে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সচেষ্ট ভূমিকা রাখব।”
পদপ্রার্থী মুহাইমিনুল ইসলাম নুহাশ বলেন, “যারা সাংগঠনিক এবং দীর্ঘদিন রাজনীতি করে তাদেরকে নেতৃত্বে আনা হোক এটাই প্রত্যাশা। দায়িত্ব পেলে ক্যাম্পাসে এবং বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের খাওয়া-থাকার যেসব সমস্যা রয়েছে এইসব সমাধানের জন্য কাজ করব। ক্যাম্পাসে যাতে সুস্থ ধারার রাজনীতি চলমান থাকে এবং শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যায় পাশে থাকার চেষ্টা থাকবে।”
পদপ্রার্থী জাহিদ হাসান শুভ বলেন, “একজন ছাত্রনেতার প্রথম কাজ শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করা। শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে কথা বলা। একজন শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্রনেতাই নেতৃত্বে আসুক বলে আমি আশা করছি। অছাত্র, মাদকাসক্ত কেউ না আসুক নেতৃত্বে। দায়িত্ব পেলে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস, প্রশাসন এবং একটি প্রগতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করাই আমার প্রথম কাজ।”
পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীবান্ধব, মাদকমুক্ত ও প্রকৃত অর্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে এমন কেউ নেতৃত্বে আসুক। দায়িত্ব পেলে জঙ্গিবাদমুক্ত ও শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ এমন একটি ক্যাম্পাস উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে সর্বদা পাশে থাকার চেষ্টা করব। প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসের উন্নয়নমূলক কাজে সহায়তা করবো।”
পদপ্রার্থী আক্তারুজ্জামান জিসান বলেন, “ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ও নেতা-কর্মীদের মাঝে যার গ্রহণযোগ্যতা আছে পাশাপাশি নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোয়ালিটি আছে, তারাই নেতৃত্বে আসবে বলে আমি আশাবাদী। দায়িত্ব পেলে আমি চেষ্টা করবে ক্যাম্পাসে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করতে। পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যও আমি আমার জায়গা থেকে যথাসাধ্য কাজ করে যাবো।”
দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের কমিটি বিষয়ে জানতে চাইলে এই ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ ফয়সাল হোসেন বলেন, “এই মাসের মধ্যেই নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের কমিটি হতে পারে। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যোগ্য নেতৃত্বের কাধে দায়িত্ব তুলে দিবেন বলেন আশা করছি।”