রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শুরু হওয়া ১০ দিনব্যাপী মুজিববর্ষ গ্রন্থ উৎসবের ৪র্থ দিনে পাঠকের ভিড় দেখা গেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি বই বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
রোববার সকাল নয়টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করলেও পাঠকের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে আয়োজকরা প্রতিদিনই সময় বাড়াতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে পাঠকগণও বই মেলার আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। মেলার কর্ণার ঘুরে দেখে গেছে প্রত্যকটির সামনেই দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। কেউ কেউ মেলার কর্ণারে বই নেড়েচেড়ে দেখছেন, আবার কেউবা কিনছেন। এমন আয়োজন নিয়মিত হবে এবং বড় পরিসরে করবে বলে আয়োজকদের প্রতি পাঠকের প্রত্যাশা।
মেলায় শিশু, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সায়েন্স ফিকশন, মোটিভেশনাল, ইসলামি ইত্যাদি নামে কর্ণারগুলোর নামকরণ করা হয়েছে। মেলায় শিশু কর্ণারের বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে এবং তারপরেই আছে সাহিত্য কর্ণারের বই। এছাড়া ইসলামি কর্ণারের বইও বেশ বিক্রি হচ্ছে।
মেলায় আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লেকচারার তানজিনা রহমান বাচ্চাদের জন্য বই কিনেন। তার কাছে মেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, “এমন মেলা প্রতি বছরই হওয়া উচিত। বিভিন্ন ধরনের বই সহজেই কিনতে পাচ্ছি। আর ঢাকাতে যে মেলা হয়, সেখান থেকে আমাদের অনলাইনে বই কিনতে হয়। কিন্তু এখানে আমরা নিজেরাই উল্টেপাল্টে বইটা দেখে কিনতে পারছি।”
বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা তাসনীম আলম সাকিব নামের এক শিক্ষার্থী এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ডিজিটাল মিডিয়া বা আকাশ সংস্কৃতির কারণেই হোক মানুষ এখন বইপড়া থেকে মানুষ অনেক দূরে সরে গেছে। তাই এমন উদ্যোগ আমাদের বইপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। আর এমন উদ্যোগ আরো বেশি করে নেওয়া উচিত, যাতে মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া বা ডিজিটাল মিডিয়া থেকে বের হয়ে প্রিন্ট মিডিয়ায় অভ্যস্ত ও আগ্রহী হয় এবং যাতে করে ‘বই আমাদের প্রকৃত বন্ধু’ এই প্রতিপাদ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।”
মেলার আয়োজক নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের একজন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম বলেন, “গত বছরের তুলনায় আমরা অনেক বেশি সাড়া পাচ্ছি। আগের বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিবসকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হতো। কিন্তু এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আয়োজন করায় বেশি সাড়া পাচ্ছি বলে মনে হয়।”
নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী এই গ্রন্থ উৎসব আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত চলবে। মেলার পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তর। ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর বইমেলা করে আসছে তারা।