শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর অষ্টম দিনে নমনীয় অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে আন্দোলনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সমবেত হয়ে অনশনকারীদের অনশন ভাঙার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ সময় তারা উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একাংশকে এই শপথ গ্রহণ করান মোহাইমিনুল বাশার রাজ।
তবে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে দুইপক্ষের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে দুইপক্ষের আলোচনার পর সিদ্ধান্ত জানাতে এক ঘণ্টা সময় নিয়েছেন অনশনকারীরা।
অনশনকারী শিক্ষার্থী শাহারিয়ার আবেদিন বলেন, "আমি আরও কিছুদিন না খেয়ে থাকতে পারবো। আমি অনশন চালিয়ে যেতে চাই। আমি অনশন ভাঙবো না।"
এদিকে অনশন ভাঙার জন্য আন্দোলনকারীদের আরও কিছুটা সময় দিয়েছেন সহযোদ্ধারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, অনশন ভাঙলেও তারা দিন-রাতের পুরোটা সময় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করিয়ে তবেই স্থান ত্যাগ করবেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, হলে নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান চেয়ে তারা বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদকে কল করেন। প্রভোস্টকে ফোন দিলে তিনি বলেন, “বের হয়ে গেলে যাও, কোথায় যাবে? আমার ঠেকা পড়েনি।’ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘কীসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায়নি।”
পরে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রীরা। এরই মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
তার আগে বিকেলে তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় উপাচার্যকে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। তবে ওই নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই অসুস্থ। এ অবস্থার মধ্যেও কর্মসূচি চালিয়ে যেতে অনড় তারা।