বাংলা বর্ষবরণের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম পরিবর্তনের একটি ভ্যালিড কারণ জানানোর দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, তাদের মতামত ছাড়াই কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার সঙ্গে তারা একমত নন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) চারুকলা অনুষদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন চারুকলা অনুষদের একদল শিক্ষার্থী। বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে চারুকলা অনুষদের প্রিন্ট মেকিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহারা নাজিফা বলেন, “ঐতিহ্যগতভাবে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রার আয়োজন করে। এরইমধ্যে বিভিন্ন ‘ট্যাগ’ দেওয়া হয়েছে। এবারও বৈশাখ শেকলমুক্ত নয়। মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা হবে। আমরা এ সিদ্ধান্ত সমর্থন করছি না। চারুকলার শিক্ষার্থীদের মতামত ছাড়া এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
শোভাযাত্রার প্রস্তুতির মধ্যে চারুকলায় দুটি মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিরও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে জাহারা নাজিফা বলেন, “১৯৮৯ সাল থেকে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এখনো এভাবে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছি আমরা।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারও মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ ব্যবহার করেছে অভিযোগ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, “শোভাযাত্রা বাতিল হোক, তা তারা চান না। তারা চান, সবাইকে নিয়ে এ উৎসব হোক। কিন্তু ‘মঙ্গল’ বাদ দেওয়ার একটি ভ্যালিড কারণ দেখান আমাদের।”
বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনে চারুকলার আয়োজন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ থেকে মঙ্গল শব্দটি বাদ দিয়ে ‘বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রা’ নাম দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ। তিনি দাবি করেন, এবার নববর্ষ উদ্যাপন ‘একপেশে সাংস্কৃতিক চর্চা’ থেকে বেরিয়ে এসে ‘ইনক্লুসিভ সাংস্কৃতিক চর্চা’ হবে।
[113576]
এদিকে শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে চারুকলায় শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও একটি প্রতিকৃতি। সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে মাস্ক পরা এক যুবককে আগুন দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।