বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা কারিম রাচির নিহতের ঘটনায় হওয়া মামলায় অভিযুক্ত রিকশাচালক আরজু মিয়াকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় ওই রিকশাচালকের বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে সেইদিন রাত ২টার দিকে তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের তদন্ত কমিটি ঘটনার দিন উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী নিয়ে রিকশাটি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করে। এরপর পুলিশ ও তদন্ত কমিটির সহায়তায় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত রিকশাচালককে শনাক্ত করা গেছে। তাকে গতকালও তদন্ত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জেনেছি। আজকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ ও অন্যান্য স্বাক্ষ্য-প্রমাণ মিলিয়ে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছি। তাকে এ ঘটনায় পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের করা মামলায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।”
তদন্ত কমিটির সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের অধ্যাপক আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “গতকাল রাত দুইটার দিকে তাকে প্রথম আটক করা হয়। তখন প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হই। অভিযুক্ত রিকশাচালক দালাল মিলনের সহায়তায় মাসুদের কাছে বিক্রি করে। আলামত নষ্ট করার জন্য রিক্সার বিভিন্ন পার্টস পরিবর্তন করেছেন তিনি। তবে তখনো রিকশাসহ কিছু এভিডেন্সের জন্য অপেক্ষা করি। আজ পুনরায় তাকে আটক করা হয় এবং তথ্য, উপাত্ত, পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া সিডিআরসহ অন্যান্য প্রমাণাদি বারবার যাচাই করে আজকে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ায় পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে বাকি ব্যাপারগুলো স্পষ্ট করবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) অলক কুমার দে বলেন, “ঘাতক রিকশাচালককে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা আজকেই তাকে আদালতে প্রেরণ করব।”
উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের সামনে বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় আহত হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান রাচি। এ ঘটনায় বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।