জাবিতে ছাত্র আন্দোলনে হামলায় জড়িত শিক্ষকদের অব্যাহতির দাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ০৬:০১ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদসহ গত ১৪, ১৫ ও ১৭ জুলাই হামলায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত সকল শিক্ষককে তদন্ত চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি প্রদান করা, অতিদ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য ও জুলাই গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীর ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও হলে পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়ামের সঞ্চালনায় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) শিক্ষার্থী ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস হতে চলেছে, কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অভিযুক্ত শিক্ষকরা এখনো ক্লাস নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা চলছে- এমন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের দোসররা পুনর্বাসিত হবে। যেহেতু কোনো নিয়ম কানুন মেনে গণঅভ্যুত্থান হয়নি। সেহেতু নিয়মের দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুর্নবাস মেনে নেব না।”

সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত বলেন, “একজন খুনি কখনো শিক্ষক হতে পারে না। আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক বশির আহমেদ ও তার সহযোগীরা বিগত আন্দোলনের মতো এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার পাঁয়তারা করেছে। কিন্তু আমরা এই আন্দোলনে সফল করেছি। যাদের হাতে শিক্ষার্থীদের রক্ত তারা কোনো ধরনের প্রশাসনিক পদে থাকা শহিদদের সঙ্গে বেইমানি। অবিলম্বে তাদের অব্যাহতি দিতে হবে এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যাতে পুনর্বাসিত হতে না পারে সে ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে।”

এদিকে মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের দপ্তরে গিয়ে তিন দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তখন উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সবগুলো দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, “উপাচার্য স্যার জানিয়েছেন, সিন্ডিকেটের সভায় আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক বশির আহমেদকে ডিন পদ থেকে অব্যাহতি না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা সিন্ডিকেট সদস্যদের অবরুদ্ধ করব।”