পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় স্বামীসহ প্রধান শিক্ষককে নির্যাতন

নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪, ০২:২৫ পিএম

নওগাঁর ধামইরহাটে পদত্যাগে বাধ্য করাতে স্বামীসহ প্রধান শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের রেড়িতলা একাডেমিতে এই ঘটনা ঘটে। 

সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধারের পর স্বামীসহ প্রধান শিক্ষককে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকেরা তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।

ভুক্তভোগীরা হলেন রেড়িতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীন ও তার স্বামী আশরাফুল হক। আড়ানগর ইউনিয়নের পলাশবাড়ী চিমুনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় আশরাফুল সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, “খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্বামীসহ প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেন। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”

ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীন বলেন, “গতকাল সকালে বিদ্যালয়ে গেলে সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওসারের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক আমার পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ দিতে থাকেন। পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় একটি কক্ষে দড়ি দিয়ে বেঁধে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাকে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনায় আমার স্বামী এগিয়ে এলে তাকেও আমার সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।”

আশরাফুল হক বলেন, “সকালে স্ত্রীকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্কুলে গেলে আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বেঁধে রাখা হয়। আমার অণ্ডকোষসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতন করা হয়েছে।” 

দুজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রেড়িতলা একাডেমির সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওসারের মোবাইল ফোনে কল হলে বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, “এক সপ্তাহ আগে রেড়িতলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত সোমবার এ বিষয়ে তারা তদন্ত করেছে।”

ইউএনও আরও বলেন, “সকালে প্রধান শিক্ষক স্কুলে গেলে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি পদত্যাগ করতে না চাওয়া বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয় জানতে পেরে আইনি সহায়তা দিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।”