ঘূর্ণিঝড় রেমাল চলে গেছে। তবে রেখে গেছে বিপুল ক্ষত চিহ্ন। ঝড়ের তাণ্ডবে সুন্দরবনের বনের হরিণ, বানর, বাঘসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করছে বনবিভাগ। এ ছাড়া বন্যপ্রাণিদের মিঠা পানির উৎস পুকুরে লোনা পানি ঢুকে পড়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে বাগেরহাটের মোংলার কানাইনগর এলাকায় একটি মৃত হরিণ শাবকের মরা দেহ ভেসে আসার খবর পাওয়া গেছে। এর আগেও সোমবার (২৭মে) দুবলার চর এলাকা থেকে একটি মৃত হরিণ উদ্ধার হয়। ধারণা করা হচ্ছে জলোচ্ছ্বাসে মারা গেছে হরিণ দুটি।
মোংলার করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজার কবির মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, “রেমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে পূর্ব ও পশ্চিম বনাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা এখন তলিয়ে গেছে। ফলে বনের হরিণ, বানর, রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার মোংলার কাইনাই নগর এলাকায় একটি মৃত হরিণ শাবক ভেসে আসার খবর পেয়েছি আমরা। সেখানে আমাদের লোক গিয়েছে। এর আগেও সোমবার দুবলার চর এলাকা থেকে একটি মৃত হরিণ উদ্ধার হয়।”
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বনসংরক্ষণ কর্মকর্তা নূরুল করিম (ডিএফও) বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে পানির অস্বাভাবিক চাপ ছিল। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের সব নদ-নদীতে প্রবাহিত হয়। সেই পানির উচ্চতা ছিল পাঁচ থেকে আট ফুট পর্যন্ত। সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। বনের প্রাণীকুলের আবাসস্থল তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণীকুলের প্রাণহানির শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
নূরুল করিম আরও বলেন, বনের মিষ্টি পানির একমাত্র আধার শতাধিক পুকুর তলিয়ে গেছে। বনকর্মী ও প্রাণীকুল ওই পুকুরের পানি পান করে থাকে। এতে করে মিষ্টি পানির একটা সংকট তৈরি হবে।