বিয়ের আসর থেকে নারীকে অপহরণ, উদ্ধারে গেলে পুলিশের ওপর হামলা

মাগুরা প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০১:৪৫ পিএম
মাগুরা থানা। ছবি : প্রতিনিধি

মাগুরা জেলা জজ আদালতে বিয়ের আসর থেকে এক নারীকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে সদর উপজলার বঙ্গা বেরইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ বলেন, এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গা বেরইল গ্রামের মাসুরা খাতুন নামে এক নারী সোমবার দুপুরে বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে মাগুরা জেলা জজ আদালতে যান। সেখান থেকে অপহরণকারীরা ওই নারীকে শহরের সাজিয়াড়া ঢালের একটি হোটেলের সামনে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে আবার স্থানীয় একটি ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ পেয়ে বিকেলের দিকে ওই ইটভাটায় মেয়েটিকে উদ্ধার করতে যায় পুলিশ। সেখানে অপহরণকারীদের নেতৃত্বে ইটভাটার শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। তবে শেষ পর্যন্ত অপহৃতাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “সোনালী ব্রিকসের ম্যানেজার জামির হোসেনের নেতৃত্বে ইটভাটার শ্রমিকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে নারীকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সদর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে ফাঁকা দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় মাসুরা খাতুনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।”

মাসুরা খাতুন বলেন, “মাগুরা সদর উপজেলার দেড়ুয়া গ্রামের দুলাল মোল্লার ছেলে ফারুকের সঙ্গে আমার বিয়ে হয় ১২ বছর আগে। কিন্তু তার সঙ্গে আমার সংসার ভেঙে যায় এবং ছাড়াছাড়ি হয় চার বছর আগে। এরপর পরিবার বিয়ে ঠিক করলে আমার ছোট ভাইকে নিয়ে সোমবার মাগুরা জজ কোর্টে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে যাই। সেখানে আমার বিয়েতে বাধা দেওয়া হয়।”

তিনি অভিযোগ করেন, “আগের স্বামীর ইন্দনে সদর উপজেলার কাশীনাথপুর গ্রামের রজব আলী মোল্লার ছেলে জামির হোসেন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে জোরপূর্বক আমাকে রাকিব হোটেলের সামনে নিয়ে আসে। সমঝোতার কথা বলে সেখান থেকে ইটভাটায় নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশসহ আমার ওপরে তারা হামলা চালায়। আমি নিজে আহত হই এবং পুলিশও আহত হয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

জানা গেছে, অপহরণকারীদের হামলায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজ এবং এরশাদ, সাইফুল ও ওমর নামে তিন কনস্টেবল আহত হন।

সদর হাসপাতালের চিকিৎসক অমর প্রসাদ বলেন, সোমবার রাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় শুকুর আলী নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনার পর রাত ১১টার দিকে মাগুরা সদর থানায় জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কাছে একটা খবর আসে মাসুরা খাতুন নামে একজন ভিকটিমকে জজকোর্টের সামনে থেকে কিছু দুষ্কৃতিকারী অপহরণ করে নিয়ে ইটভাটায় নিয়ে গেছে। তাকে উদ্ধার করতে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়। উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় একপর্যায়ে দুষ্কৃতিকারীরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”