মানুষ জীবিকার তাগিদে গড়ে তুলছে শিল্পকারখানা। সেই কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ও শব্দ দূষণে সাভারের গেন্ডা প্রাইমারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও মানসিক বিকাশ। এ ছাড়া বিদ্যালয়টিতে জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান ও মানসম্মত শ্রেণিকক্ষের অভাবে দিনে দিনে কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাভার পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গেন্ডা প্রাইমারি বিদ্যালয়ের পাশেই অবস্থিত একটি খাল। সেই খালে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ও উচ্চশব্দে স্বাভাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হয় বিদ্যালয়ের পাশের খালে। এতে দূষিত হচ্ছে খালের পানিও। এ ছাড়া খালের স্রোতে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভেঙে এসব বিষাক্ত বর্জ্য বিদ্যালয়ের সীমানায় প্রবেশ করছে।
মোখলেসুর নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “এ বিদ্যালয়টি ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। সাভার উপজেলার ১২১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে এ বিদ্যালয়ের স্থান তৃতীয় ছিল। কিন্তু এখন বিভিন্ন সমস্যায় জরাজীর্ণ বিদ্যালয়টি। টিনসেড ঘরগুলোর ওপরে টিন নষ্ট হয়ে গেছে। অপর দিকে খালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের মাঠটি।”
আমিনুর নামের অপর এক ব্যক্তি বলেন, “বিদ্যালয়ের পাশের খাল থেকে কারখানার বিষাক্ত গন্ধ আসে।এ ছাড়া কারখানার শব্দ দূষণের ফলে স্বাভাবিক শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ছে।”
এ বিষয়ে গেন্ডা প্রাইমারি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান খান বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ের একটি সুনাম রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার মান ঠিক রাখলেও পরিবেশগত কারণে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। খালের পানির বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যালের দুর্গন্ধ বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করছে।”
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়মুল হুদা বলেন, “বিষাক্ত পানি ব্যবহার ফলে স্কিন ক্যান্সার, চুলকানি, এলার্জিসহ মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া শব্দ দূষণের ফলে শিক্ষার্থীদের মাথা ব্যথাসহ কানের সমস্যা দেখা দিতে পারে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লাইলী আহমেদ বলেন, “বৈশ্বিক মহামারি পর শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।”
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুস শিহার বলেন, “বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”