গারো পাহাড়ে আনারস চাষে সফল পিটার

সুজন সেন, শেরপুর প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৩, ০৩:৩৭ পিএম

শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে সুমিষ্ট জাতের আনারস চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলার উত্তর বাকাকুড়া গ্রামের পিটার সাংমা নামের এক গারো আদিবাসী তার শ্বশুর হালেন্দ্র সাংমার ১৮ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এই আনারসের বাগান করেন।

পিটার বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় এখন পর্যন্ত বাগানের প্রায় সোয়া লাখ পিস আনারস ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এর স্বাদ মধুপুরের আনারসের চেয়ে অনেক বেশি মিষ্টি ও রসালো। অন্যদিকে এ অঞ্চলের মাটি আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী আর পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষিতে নতুন অর্থকরী ফসল হিসেবে আনারসের খ্যাতি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা জেলা কৃষি বিভাগের।

আনারস চাষি পিটার সাংমা জানান, প্রায় দেড় বছর আগে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে ঝিনাইগাতী এসে তিনি শ্বশুরের ১৮ বিঘা জমিতে প্রায় সোয়া লাখ আনারসের চারা রোপণ করেন। এবার ওইসব চারা থেকে এক লাখ ১০ হাজার গাছে আনারসের ফলন হয়। এসব ফল মধুপুরের এক ব্যবসায়ীর কাছে ১৬ লাখ টাকায় বিক্রিও করেছেন। এ ছাড়া বাগানে আরও প্রায় তিন লাখ টাকার আনারস বিক্রি করার উপযোগী হয়েছে।

পিটার সাংমা বলেন, বাগানে বন্য হাতির আক্রমণে ২০ হাজার পিস আনারসের চারার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চারা সংগ্রহ, বাগান রক্ষণাবেক্ষণ, সেচ, সার ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা।

স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন মারমা বলেন, প্রথম অবস্থায় স্থানীয়রা পিটারের বাগান দেখে সন্দিহান ছিলেন। পরে ফলন ভালো দেখে গ্রামের মানুষের মনে আশার আলো দেখা যায়। শুধু তাই না অনেকেই পাহাড়ের পতিত জমিতে আনারস চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

হরেন মারমা আরও বলেন, পিটারের বাগান দেখতে দূর দূরান্তের অনেকেই এখানে আসছেন। এ ছাড়া এ বাগানে পরিচর্যার কাজ করে অনেকেই আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক আব্বাস মিয়া, রতন শেখ ও আরজ আলী জানান, পিটারের বাগানের আনারস মধুপুরের আনারসে চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু ও রসালো। তারা আগামীতে আনারসে বাগান করার পরিকল্পনা করছেন।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, পাহাড়ি মাটি মূলত এসিডিক। এ মাটি আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উচ্চমূল্যের এ ফল চাষ করে পাহাড়ের অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আসবে।