বড় বোনের কিনে দেওয়া ফুলের চারা রোপণ করা আর পরিচর্যা করাই ছিল রেজওয়ানা বিলকিস রিপার নেশা। বড় বোনের বিয়ের পর নিজেই বাগানি হয়ে যান। শুরু হয় ফুলবাগানের বাগানি হওয়ার গল্প। পাবনা শহরের পুরোনো চারতলা মোড়ের সাহাপাড়ার সাবেক ব্যাংকার মীর্জা আব্দুর রহিমের দ্বিতীয় কন্যা রিপা।
রিপা সম্প্রতি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ছাদবাগানের পরিচর্যাই তার প্রধান কাজ ও নেশায় পরিণত হয়েছে।
ফুলবাগানি রিপা জানালেন, ফুল গাছ, ফুলবাগান আর ফুল এখন তার নেশা। তার চারপাশ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে এই বাগানের মায়া। বিকেলে বাগানের পরিচর্যা করতে উঠলে তিনি ভুলে যান ছাদ থেকে নামার কথা।
রিপা বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ফুলের প্রতি অন্য রকম নেশা কাজ করত। একটি সুবৃহৎ ছাদবাগানি হতে পারব, এটা কখনো ভাবতে পারিনি। বাগানের দিকে তাকালে, ফুল ফোটা ও এর সৌন্দর্য দেখলে আমি নিজেই স্থির থাকতে পারি না।”
রিপা বলেন, “আপুর পথ অনুসরণ করেই আমি যেখানে যেতাম, আগে দেখতাম কোনো ফুলের গাছ বা চারা আছে কি না, যা আমার নেই। সুযোগ হলেই কিনে নিতাম, চেয়ে নিতাম। উদ্দেশ্য ফুলের গাছে সমৃদ্ধ হবে আমার বাগান।”
রিপার ছাদবাগানে বর্তমানে তিন শর বেশি ফুলের চারা রয়েছে। লণ্ঠন জবা তার বাগানের অন্যতম আকর্ষণ। সেই সঙ্গে জলপদ্ম, পাঁচ-ছয় প্রজাতির শাপলা, দেশি শাপলা, শালুক, ১০ রকমের বিদেশি গোলাপ, ২ প্রজাতির নাইট কুইন, মে ফুল, কয়েক প্রজাতির কাঠ গোলাপ, বিভিন্ন প্রজাতির লিলিসহ নানা প্রজাতির ফুলের সমাহার রিপার ছাদবাগানে।
বাগান পরিচর্যা, রোগবালাই নিরোধের বিষয়ে রিপা বলেন, “নিয়মিত বিকেলে পানি দিই। আগাছা পরিষ্কার করি। জৈব সার প্রয়োগ করি। রাসায়নিক কোনো পদার্থ বা জিনিস প্রয়োগ থেকে বিরত রেখেছি। গাছগুলো বাঁচানোর প্রধান উপকরণ পানি সেচ দেওয়া। এখন বৃষ্টির সময়ে পানি কম দিলেও চলছে।”
প্রতিদিনই আত্মীয়স্বজন বেড়াতে এলে তাদের উদ্দেশ্য থাকে আগে ছাদে যাওয়া। হরেক রকম ফুলের সমাহার দেখা। নয়ন জুড়ানো আর সৌন্দর্যে এক অসম্ভব সময় ব্যয় করেন তারা।