চট্টগ্রামে রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ পাটকল দ্রুত চালু ও স্থায়ী-অস্থায়ী-বদলিসহ সব শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের দাবিতে শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র জনতা ঐক্য পরিষদ সমাবেশ করেছে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর আমিন জুট মিল গেটে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পাটকল রক্ষায় শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্যের সদস্যসচিব শ্রমিক নেতা কামাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় উপস্থিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক কৃষক ছাত্র জনতা ঐক্যের আহ্বায়ক আমির আব্বাস। বক্তব্য রাখেন আমিন জুট শিল্পাঞ্চল এলাকার শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ হানিফ, মোহাম্মদ বেলাল, বদলি শ্রমিক আব্দুর রহমান, জাবেদ হোসেন সানি, শামসুল আলম, মোতালেব, চাঁন মিয়া, শ্রমিক নেত্রী রহিমা বেগম, শামসুন নাহার সুমি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুর রুদ্র, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল চট্টগ্রাম এর সংগঠক ইনজাম উল হুদা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “১৪ মাস পেরিয়ে গেলেও পাটকল চালু করা হয়নি এমনকি সব শ্রমিকের বেতনও পরিশোধ করা হয়নি। কিন্তু গত ২ জুলাই রাষ্ট্রয়াত্ত ২৬টি পাটকলের বন্ধ করার সময় দুই মাসের মধ্যে সকল শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করে মিলগুলোকে আধুনিকায়ন করে, পুনরায় তিন মাসের মধ্যে মিল চালু করার ঘোষণা দেয় সরকার। চলতি বছরে জুলাই মাসে ঈদুল আজহার সময় শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে সরকার বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের নির্দেশনা দিলেও বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে বঞ্চিত রেখে নামমাত্র গুটিকয়েক শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ করে।
অন্যদিকে বিজেএমসি, তথা মিল কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রায়ত্ত ৫টি পাটকলের অস্থায়ী শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। ফলে দেশব্যাপী পাটকল শ্রমিকরা অসহায় ও দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। এদের অধিকাংশ বেকার, যারা বাসা ভাড়া জোগাড় করতে পারছে না। না খেয়ে, বিনা চিকিৎসায় অর্থাভাবে অনেকে মারা গেছেন। তাদের সন্তানদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত। চরম হতাশায় এই শ্রমিকেরা দিন পার করছে। পাটকল চালুসহ পাওনা পরিশোধের দাবিতে গত একবছর ধরে মানববন্ধন, শ্রমিক সমাবেশ, বিজেএমসি কার্যালয় ঘেরাওসহ আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি।”
শ্রমিকনেতারা বলেন, “শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কার্যক্রম কচ্ছপ গতিতে চলছে।”
সমাবেশে ছাত্রনেতারা বলেন, “১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও এ শ্রমিক সন্তানদের কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারেনি। অবিলম্বে পাটকল চালু না করলে শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে থাকবে।”
সমাবেশ থেকে বক্তারা ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, “সকল শ্রমিকের পাওনা বেতন পরিশোধ করে বন্ধ পাটকলগুলো চালু করার সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না এলে দেশব্যাপী শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতাকে নিয়ে জোরদার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি দাওয়া আদায় করা হবে।”