গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে কয়েক বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় শসার ফলন কমলেও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি। উপজেলার ইদিলপুর ও ধাপেরহাট ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের চাষিরা শসা চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের জাহিদ বলেন, “লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি বাবাকে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতাম। তবে চাকরি না পাওয়ায় বেকারত্ব ঘোচাতে কৃষিকাজে মনোযোগী হই। গত মৌসুমে আমি ফুলকপি, বাঁধাকপি ও টমেটো চাষ করে উৎপাদন খরচ তুলতে পারিনি। সেই জমিতে এবার শসা লাগিয়েছি। ফলন ভালো না হলেও দাম ভালো থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখেছি।”
ধাপেরহাট ইউনিয়নের হিংগারপাড়া গ্রামের কৃষক মাসুদ আলী বলেন, “আমি ৫০ শতাংশ জমিতে শসার চাষ করেছি ১২ রমজান থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত তিন লাখের বেশি টাকা বিক্রি করেছি। আজও সাত মণ শসা ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। গাছের বয়স হওয়ায় ফুল-ফল কমে গেছে। হয়তো আর এক সপ্তাহ শসা উত্তোলন করা যাবে।”
হিংগার পাড়া গ্রামের লিমা বেগম বলেন, “শসা চাষে খুব পরিশ্রম হয়। ভালো দাম পাওয়ায় সেই পরিশ্রম ও কষ্টের কথা ভুলে গেছি। ১২ দিনে ৩০ শতাংশ জমি থেকে এক লাখ টাকার ওপরে শসা বিক্রি করেছি।”
ধাপেরহাট বাজারের একাধিক শসা ব্যবসায়ী বলেন, “উৎপাদন কম হওয়ায় ও বাজারে চাহিদা থাকায় আমরা বাজারে শসা পাচ্ছি না। ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা রাস্তা মোড়ে মোড়ে শসা কিনে আমাদের কাছে বিক্রি করছে। আমাদের লাভ কম হলেও কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক মানুষের, আমরাও কম বেশি লাভ করছি। ধাপেরহাট এলাকার উৎপাদিত শসার কদর সারা দেশে।”
ধাপেরহাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “এ বছর শসাচাষিরা দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হয়েছে। আমাদের এলাকায় মাচায় শসা চাষ হয়, তাই উৎপাদন খরচ একটু বেশি হলেও এ বছর কৃষক লাভ করেছে।”
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুরের উপজেলা কৃষি অফিসার মতিউল আলম বলেন, “সারা দেশে লাল মাটি অধিষ্ঠিত ধাপেরহাটের উৎপাদিত শসার ব্যাপক চাহিদা। অন্যান্য এলাকার শসার থেকে এ এলাকার শসার স্বাদ ব্যতিক্রম। আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার তুলনায় বৃষ্টির অভাবে শসার ফলন কম হয়েছে।”