বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ যেমন শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ নানা দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তেমনিভাবে নারীরাও এখন আর শুধু বাড়ির কাজে সীমাবদ্ধ নেই। বাড়ির কাজের পাশাপাশি অনলাইনে ব্যবসা করে বদলে গেছে অনেক নারীর জীবন। নতুন উদ্যোগ ও বিভিন্ন শিল্প নিয়ে কাজ করে সাড়া ফেলেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের নারী উদ্যোক্তারা। তাদের ব্যবসার প্রসারে কাজ করছে একটি ফেসবুক গ্রুপ।
যদিও অনলাইন ব্যবসা বা ই-কমার্সের ধারণাটি আমাদের দেশে খুব বেশি দিনের নয়। তারপরেও যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটার প্রতি জনগণের ঝোঁক দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। আর এ বিষয়টিকে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তরা।
ঠাকুরগাঁও অনলাইন উদ্যোক্তা পরিবার নামে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে পথচলা শুরু করেন ঠাকুরগাঁওয়ের নারী উদ্যোক্তারা। বর্তমানে গ্রুপটিতে রয়েছে ৬৮ হাজার সদস্য ও ৩০০ নারী উদ্যোক্তা। অনলাইনে ব্যবসার মাধ্যমে যেমন নিজেরা লাভবান হচ্ছেন তেমনি সৃষ্টি করছেন অনেক নারীর কর্মসংস্থান।
নারী উদ্যোক্তা আবেদা সুলতানা আশা বলেন, “ছোট থেকেই হাতের কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল। পরে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাসায় ব্যবসা শুরু করলেও আয় তেমন একটা হতো না। কিন্তু যখন অনলাইনের মাধ্যমে প্রচার ও বিক্রি শুরু করি, তখন দেখি মানুষের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আয়ও ভালো হচ্ছে। বর্তমানে আমার এখানে ১২ জন নারী নিয়মিত কাজ করছেন।”
নারী উদ্যোক্তা লাভলী আক্তার বলেন, “করোনার মহামারিতে পার্লার নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়ি। ঠিক সে সময় অনলাইন উদ্যোক্তা পরিবার গ্রুপে আমার কাজগুলো পোস্ট করি। অনলাইনে পোস্ট করার পর থেকেই আমার কাজের চাহিদা বাড়তে থাকে। বর্তমানে পার্লারে কাজের পাশাপাশি বিউটি পার্লারের কাজের ওপর নারীদের ট্রেনিং দিচ্ছি।”
ঠাকুরগাঁও অনলাইন উদ্যোক্তা পরিবার গ্রুপের মডারেটর মমতাজ ফারিহা সংবাদ প্রকাশকে জানান, ২০২০ সালের মে মাসে জেলার নারীদের সমন্বয়ে ঠাকুরগাঁও অনলাইন উদ্যোক্তা পরিবারের যাত্রা শুরু হয়। শুরুর দিকে বাধা বিপত্তি এলেও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে উদ্যোক্তাদের সংখ্যা। করোনায় ঘরবন্দী মানুষ অনলাইনে কেনাবেচায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। নানা রকম খাবার, পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদায় বাড়তে থাকে। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে বাড়িতে বসে হাতের তৈরি হরেক রকম মুখরোচক খাবার, কুশিপণ্য ওয়ালম্যাট, বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাকসহ নানা রকম পণ্য বিক্রির প্রসার ঘটেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মো. শামসুরজ্জামান বলেন, “উপজেলা প্রশাসন নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে আন্তরিক। আমরা তাদের প্রশিক্ষণসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করে থাকি। তাদের ব্যবসা প্রসারের জন্য ঋণ প্রদান ব্যবস্থাসহ সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”